নিউজ ডেস্ক , বাকুড়া ,২০ অক্টোবর : নেই বাহারি আলোর রোশনাই কিংবা ঝাঁ চকচকে প্যান্ডেল। তার বদলে আন্তরিক নিষ্ঠা ও ভক্তিতে পূজিতা হন দেবী দূর্গা। কিন্তু এতে আর নতুন কি? বঙ্গদেশের আনাচে কানাচে এমন পূজোর উদাহরণ রয়েছে ভূরি ভূরি। কিন্ত এক জায়গাতেই এই পুজো আলাদা অন্য পুজোগুলোর থেকে।
বাকুড়ার হীরবাঁধের প্রত্যন্ত গ্রাম দোমহনিতে দেবী পূজিতা হন সাঁওতাল রমণীর দ্বারা। ‘মারাং বারা য়াহা ইয়ুব মায়েন’ মন্ত্রে দীর্ঘ দুদশক ধরে দেবীর পুজো করে আসছেন জঙ্গলমহলের বাসিন্দা আদিবাসী রমণী সরস্বতী হাঁসদা। দীর্ঘ প্রায় ২০বছর আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুজো শুরু করেছিলেন সরস্বতী দেবী। যদিও এই পুজো শুরুর যাত্রাপথ খুব একটা মসৃণ ছিলো না। আদিবাসী সমাজে মূর্তির পুজোর প্রচলন নিষিদ্ধ। ফলে পুজো শুরুর আগে প্রচুর বিরোধিতার সন্মুখীন হতে হয় সরস্বতী হাঁসদা ও তার পরিবারকে।পুজো করার বিষয়টি গড়ায় থানা-পুলিশ পর্যন্ত। যদিও পুজো করার লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন তিনি। সারা বছর পুজো হলেও সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত নিয়ম মেনে পুজো হয় এখানে। সুরম্য, পাকা মন্দির নয়, খড় পলিথিন ঢাকা চালাঘরেই পূজোর আয়োজন করা হয়ে থাকে এখানে। সারাবছর সেই মূর্তিতে পূজো করা হয়।সপ্তমীতে নতুন মূর্তি এনে পুজো করা হয়। পুরনো প্রতিমা কাপড় দিয়ে ঢাকা দেওয়া থাকে অন্যত্র। বিজয়া দশমীর পর একাদশী তিথিতে বিসর্জন দেওয়া হয় সেই পুরোনো প্রতিমা।যদিও এবছর আনা হয়নি নতুন প্রতিমা। পুরনো মূর্তিতেই পুজো হবে এবার। দেওয়া হয়না কোনরকম বলিও।এক সময় যে পুজো করতে গিয়ে বাধা পেয়েছিলেন সরস্বতী হাঁসদা। এখন সেই পুজোর জন্য অপেক্ষা করে থাকেন গ্রামবাসীরা। পুজো হয়ে উঠেছে সকলের। ফলে বাহুল্যতা ও আড়ম্বর না থাকলেও প্রাণের আরাম আর মনের শান্তিতেই এই পুজোয় সামিল হন সমলে।