নিউজ ডেস্ক , ১৩ নভেম্বর : গলায় রক্ত জবা কপালে লাল চন্দন এই বেশেই পূজিতা হন মা মুন্ডমালিনী। হ্যাঁ ঠিক এরকম বেশেই দেখতে অভ্যস্ত মায়ের ভক্তরা। কিন্তু এক্ষেত্রে মা কালী কোন চিন্ময়ী রূপের নন, মা সাক্ষাৎ জীবন্ত।যেখানে মন্ডপে মন্ডপে বা বিভিন্ন পারিবারিক পুজোতে দেবী কালীর মূর্তি পুজো করা হয়।সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বাঁকুড়া জেলার ইন্দাসের মির্জাপুরে সাঁতরা বাড়িতে মুর্তির পরিবর্তে বড় বৌমাকে কালীর আসনে বসিয়ে পূজিত হতে দেখা গেলো। বছরের পর বছর হয়ে আসছে এই আচার।
রীতি অনুযায়ী সাঁতরা পরিবারের বড় বৌমাকে গলায় রক্ত জবা এবং কপালের লাল চন্দনের তিলক দিয়ে সাজানো হয়। তারপর শুরু হয় একেবারে শাস্ত্রমতে পুজো পাঠ। আর এই জীবন্ত দেবীর পুজো অর্চনা দেখতে দূর দুরান্ত থেকে ভিড় জমান অসংখ্য মানুষ। পারিবারিক রীতি নাকি চলে আসছে এমনটাই জানালেন পরিবারের সদস্য। কথিত আছে একটা সময় এই বংশের কোন পূর্বপুরুষ মূর্তিপূজো না করার স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন, আদেশ পেয়েছিলেন কোন মূল্যবান ধাতু দিয়ে মায়ের মূর্তি তৈরি করে পুজো করার। মায়ের স্বপ্নদেশ বলে কথা তা কি আর ভাঙ্গা যায়? সেই সময় আর্থিক অসচ্ছলতার জেরে দামী ধাতু দিয়ে মূর্তি গড়ে পুজো করতে তারা ব্যর্থ হলেও। এক অনন্য পন্থা অবলম্বন করেছিলেন এই বংশের পূর্বপুরুষেরা।তাঁরা শুরু করেছিলেন মানবী দেবীর পুজো, সেই রীতি আজও অব্যাহত।আজও পরিবারের বড় গৃহবধূকে দেবীর আসনে বসিয়ে পুজো করা হলো আরম্ভরের সাথে। সেই সময় তাল পাতা দিয়ে তৈরি মন্দিরে মানবী দেবীর পুজো শুরু হয়েছিল সাঁতরা পরিবারের পূর্বপুরুষেরা,এখন অবশ্য পাকাপোক্ত মন্দির তৈরি হয়েছে, সেখানেই চললো দেবীর আরাধনা। এই সাঁতরা পরিবারের বর্তমানের বড় গৃহবধূ হীরা বালা সাঁতরা গত ৩৮ বছর ধরে মা কালি রূপে পূজিতা হয়ে আসছেন, এবারেও তার অন্যথা হলো না।।তাঁকে দেবীর আসনে বসানোর পর,পুরোহিত তাকে দেবী রূপেই পুজো করলেন।দেবী হিসাবে যেখানে পুজিতা হন মানব রূপী মাকালী সেখানে ভিড় তো জমাবেন ভক্তরা।ফলে পুজো দেখতে সাঁতরা বাড়িতে ভিড় জমালেন এলাকার মানুষ।পারিবারিক রীতি মেনে চললো পুজার্চনা।