fbpx

১১৬ বছরের প্রাচীন পুজোকে ঘিরে সম্প্রীতির নজির মালদা জেলার মানিকচকে

নিজস্ব সংবাদদাতা , মানিকচক , ১২ নভেম্বর : জাতপাতকে কেন্দ্র করে যখন ক্রমশ অসহিষ্ণু হচ্ছে দেশ। ঠিক তখন মালদার মানিকচকের সর্বজনীন কালিপূজো সম্প্রীতির অনন্য নজির। রাম রহিম মিলিত হয়েই এই পুজোর আয়োজন করে। বহু বছর ধরেই হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষেরা একত্রিত হয়েই এই পুজার আয়োজন করে আসছে। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

উল্লেখ্য, প্রায় ১১৬ বছর পূর্বে এই পুজার আরম্ভ হয় মানিকচক থানার সংলগ্ন এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেই সময় গঙ্গানদী মানিকচক থানার পাশ দিয়ে বয়ে যেত। এমনকি সেই সময় তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছিল গঙ্গা নদীতে। নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছিল একের পর এক বাড়ি, স্কুল, চাষের জমি। কথিত আছে, সেই সময় মানিকচক থানার কর্তব্যরত ফুদিনা সিং নামে এক পুলিশ কনস্টেবল মায়ের স্বপ্নাদেশ পান। সেই স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর থেকে থানার সংলগ্ন এলাকায় কালীপুজার আয়োজন করেন তিনি। এলাকার মানুষের বিশ্বাস সেই পুজার পর ক্রমশ শান্ত হয়ে পরেছে গঙ্গানদী। এমনকি থানা অভিমুখ থেকে পরিরর্তিত হয় নদীর গতিপথও। তারপর থেকে প্রতি বছর নিয়ম করে কালীপুজা করা হয় থানা চত্বরে। তবে কেবল মাত্র হিন্দুরা নন, প্রথম থেকেই থেকেই এই পুজায় সমান ভাবে অংশগ্রহন করেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষেরা। সময়ের সাথে সাথে থানা চত্বরে নির্মান হয়েছে মন্দিরের। এমনকি স্থাপন করা হয়েছে মায়ের পাথরের মূর্তি। প্রতি বছর পূজা পরিচালনার জন্য কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক পদেও থাকেন উভয় সম্প্রদায়ের মানুষেরা। যেমন এবছর পুজো কমিটির সম্পাদক জামাল খান তো আবার সভাপতি গৌর চন্দ্র মন্ডল।

মানিকচকবাসীর যৌথ উদ্যোগে পুজাকে কেন্দ্র করে ৪ দিন বিভিন্ন অনুষ্ঠান করা হয়। কিন্তু এবছর করোনা আবহে সমস্তটাই বদল হয়েছে। বাতিল করে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠান। মানিকচকের সর্বজনীন কালিপূজো পথ দেখাতে পারে বাংলা তথা দেশবাসীকে এমনটাই মনে করছে মানিকচকবাসী। এবছর পূজোর শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে জোড় কদমে। মন্দির চত্বরে চলছে নতুন করে রং করার কাজ। সাথে মায়ের স্থাপিত পাথরের মূর্তিতে নতুন করে রং করা হয়েছে। আলোর ঝলকানিতে সাজিয়ে তোলা হয়েছে গোটা থানা চত্বর। এই পুজোতে বরাবরই আনন্দ মুখরিত থাকে মানিকচকের সামগ্রীক এলাকা। এ প্রসঙ্গে পুজো কমিটির সম্পাদক জামাল খান জানান, উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ মিলিত হয়ে পূজো পরিচালনা করে। এক সময় থানার পুজা বলে পরিচিত থাকলেও বর্তমানে তা সর্বজনীন। সমস্ত রকম ভক্তি নিষ্ঠার সাথে দুই সম্প্রদায়ের মানুষও মেতে ওঠে পুজোর কয়েকটা দিন মায়ের আরাধনায়। এই বিষয়ে পূজা পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌর চন্দ্র মন্ডল বলেন, মানিকচকের এই পুজো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির। মায়ের পাথরের মূর্তি রয়েছে। যা বিসর্জন হয় না। প্রতিবছর বিভিন্ন রকম কর্মসূচির করা হলেও এবছর সমস্ত বন্ধ রয়েছে। করোনা আবহে সমস্ত রকম প্রশাসনিক নির্দেশিকা মেনে এবছরের পূজো পরিচালনা করা হবে। মানুষ যাতে আনন্দ পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে পুজো মণ্ডপ চত্বর সর্বত্রই আলোর ঝলকানিতে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।

Next Post

রায়গঞ্জে একাধিক কর্মসূচীতে অংশ নিলেন সিপিএমের দুই শীর্ষ নেতা

Thu Nov 12 , 2020
Share on Facebook Tweet it Share on Reddit Pin it Share it Email নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ১২ নভেম্বর : আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় রণকৌশল ঠিক করতে বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জে এলেন রাজ্য বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তাঁর সাথে একই কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন সিপি আই এমের পলিটব্যুরো সদস্য মহঃ […]

আপনার পছন্দের সংবাদ

RCTV Sangbad

24/7 TV Channel

RCTV Sangbad is a regional Bengali language television channel owned by Raiganj Cable TV Private, Limited. It was launched on August 20, 2003, as a privatecompany. The channel runs a daily live broadcast from Raiganj, West Bengal. The company also provides a set-top box.

error: Content is protected !!