নিউজ ডেস্ক : দুর্গাপূজা এগিয়ে এলেই ব্যাস্ততা চরমে ওঠে রায়গঞ্জের ৩৪ নং জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ঢাকী পাড়ায়। তবে এবারে করোনা সংক্রমণের রেশ এসে পড়েছে ঢাকশিল্পীদের জীবনেও। পুজো এগিয়ে আসলেও এখনো কোনো ক্লাব বা বাড়ির পুজোর একটি ও বায়না হয় নি।
সব মিলিয়ে ঢাকের বোল মিলিয়ে গিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের নিস্তব্ধতা গ্রাস করেছে রায়গঞ্জের এই ঢাকীপাড়াকে।
উল্লেখ্য রায়গঞ্জ শহরের হাইরোড সংলগ্ন রেলক্রসিং এর কাছেই অবস্থিত ঢাকীপাড়া। সারাবছর বিবাহ, অন্নপ্রাশন সহ বিভিন্ন আনন্দানুষ্ঠানে ব্যান্ডপার্টি র কাজ করে পয়সা উপার্জন করেন এখানকার বাজনাদারেরা। আর পুজোর মাস দুই আগে থেকেই বিভিন্ন পুজো কমিটির সদস্যদের আনাগোনায় সরগরম হয়ে উঠতো এই এলাকা।
মালদা থেকে কারিগর এনে ঢাকের খোলনলচে বদলে নতুন করে তোলা হত। শুধু রায়গঞ্জ নয়, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত এমনকী পার্শ্ববর্তী বিহার রাজ্যেও পুজোর সময় পাড়ি দিতেন এই ঢাকীরা। পুজোতে ঢাক বাজিয়ে হাতে আসতো বাড়তি অর্থ। কিন্তু করোনা আবহ বদলে দিয়েছে যাবতীয় হিসেব নিকেষ। পুজোর প্রায় দেড়মাস আগে ঢাকী পাড়ায় যেন বিসর্জনের আবহ। নেই কোনো ব্যস্ততা। প্রদীপ নট্ট বলেন,” এই বছরে কোনো বিয়ে বা অন্য অনুষ্ঠানের কাজ পাই নি। আশা ছিলো পুজোর সময় অবস্থার কিছুটা উন্নতি হবে।
কিন্তু এখনো কোন পুজো কমিটির থেকে একটিও বায়না পাই নি। সরকারের দেওয়া চালে কোনোমতে পেট চলছে কিন্তু কাজ না থাকায় হাতে কোন পয়সা নেই। খুব কষ্টে আছি। সরকার থেকে যদি শিল্পীভাতার সুযোগ করে দিতো তাহলে বেঁচে যেতাম। ” গোপাল নট্ট নামে অপর এক ঢাক শিল্পী বলেন,” প্রতিবার পুজোর আগে মালদা থেকে কারিগর এনে ঢাক সারাই করতাম।
কিন্তু এবারে কোনো কাজ নেই। পুজো উদ্যোক্তারা যোগাযোগ করেনি। কীভাবে সংসার চালাবো বুঝতে পারছি না। ” সব মিলিয়ে করোনা ভাইরাসের হানাদারীতে বিপন্ন ঢাকশিল্পীরা। ঢাকের বোলে পুজোমন্ডপ আবারো কবে মুখরিত হয়ে উঠবে এখন সেদিকেই তাকিয়ে এরা সকলে।