নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ৩ সেপ্টেম্বর : পুরানো মামলায় থানাতে নিয়ে আসা এক বিজেপি কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে রায়গঞ্জে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত বিজেপি কর্মীর নাম অনুপ রায় (২৩)। বুধবার রাতে পুলিশ তড়িঘড়ি মৃতদেহ উদ্ধার করে রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ মর্গে নিয়ে আসে। রাতের অন্ধকারেই ময়নাতদন্ত করায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের লোকজন সহ বিজেপি নেতা কর্মীরা। রাতেই হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিলে রায়গঞ্জ থানার বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইটাহারের নন্দনগ্রামের বাসিন্দা অনুপ রায় মাস ছয়েক হল সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি রাজবংশী সম্প্রদায়ের ও নেতা ছিলেন। বুধবার দুপুর ১ টা নাগাদ তাঁকে পুরোনো একটি ছিনতাইয়ের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় অনুপ রায় অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষনা করেন। মৃত অনুপ রায়ের মা দুলালী রায় এদিন কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন,” এলাকায় কারোর সাথে বিবাদ ছিলো না ছেলের।
সুস্থ সবল ছেলেকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। তারপর কী ভাবে তার মৃত্যু হলো? পুলিশ আর তৃণমূল মিলে ছেলেকে খুন করেছে। দোষীদের কঠোর শাস্তি চাই। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে পুনরায় মৃতদেহের ময়না তদন্তের দাবী জানাচ্ছি। অন্যদিকে জেলা বিজেপি সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন,, ” থানার ভেতর প্রচন্ড মারধোর করা হয় অনুপ কে। মারের চোটে তার কিডনী সহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভীষন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তৃনমূল কংগ্রেস ও পুলিশ পরিকল্পিত ভাবে খুন করেছে অনুপ কে। আর আসল সত্য লুকাতে পরিবারকে খবর না দিয়ে রাতের অন্ধকারে তড়িঘড়ি ময়না তদন্ত করা হয়েছে। আমরা পুনরায় ময়না তদন্ত ও ফরেনসিক পরীক্ষার দাবী জানাচ্ছি। এই খুনের প্রতিবাদে জেলা জুড়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।, যদিও জেলা তৃণমূল কথা নেতা অরিন্দম সরকার বলেন,” এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনো যোগ নেই। বিজিপি মিথ্যা অভিযোগ আনছে।
গোটা রাজ্যজুড়ে ই একই ভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করার কাজ করছে বিজেপি। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে স্বাভাবিক মৃত্যুর উল্লেখ রয়েছে। বিজেপি রাজনৈতিক ফায়দার জন্যই এই অভিযোগ করছে।” যদিও রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানিয়েছেন, অনুপ রায় নামে ঐ ব্যক্তিকে পুরনো মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছিল থানাতে। অসুস্থ বোধ করায় তাঁকে রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষনা করেন। ময়না তদন্তের রিপোর্টে স্বাভাবিক মৃত্যুর উল্লেখ রয়েছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।