হরিশ্চন্দ্রপুর, ২৪ জুলাই : একই উপভোক্তার নামে বরাদ্দ হয়েছে আবাস যোজনা প্রকল্পে দুই-দুইটি ঘরের আইডি। এই ঘটনাকে ঘিরে অভিযোগ প্রকাশ্য আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবানীপুর গ্রামে।।
অভিযোগ, মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআইএম এর সদস্যা রবিনা খাতুন ও তার স্বামী গোলাম মর্তুজা এবং নোডাল অফিসার মহম্মদ ইয়াসিন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা তালিকায় একই উপভোক্তার ডবল আইডিতে টাকা ঢোকানোর জন্য রেজিস্ট্রেশন করিয়ে রেখেছে। অন্যদিকে একই তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও প্রথম কিস্তির টাকা পর্যন্ত পায়নি অনেক উপভোক্তা। এমনকী নোডাল অফিসারের সঙ্গে যোগসাজশ করে একই পরিবারের অন্য সদস্যদের নামেও ঘর বরাদ্দ করেছে পঞ্চায়েত সদস্যা ও তার স্বামী। ফলে ঘর পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃত প্রাপকেরা।এই ঘটনায় স্থানীয় তৃনমূল নেতা আনোয়ার কবির ও উপভোক্তাদের একাংশ মিলে বৃহস্পতিবার বিডিও অফিসে পঞ্চায়েত সদস্যা, স্বামী ও নোডাল অফিসারের নামে লিখিত অভিযোগ করেন।অভিযোগকারী আনোয়ার কবির জানান, ভবানীপুর পূর্ব বুথে প্রায় ৮-১০ জন উপভোক্তার নামে দুই দুইটি করে ঘরের আইডি রয়েছে।উপভোক্তারা প্রথম আইডি’র টাকা পেয়ে ইতিমধ্যে ঘর তুলে নিয়েছে।আবার সেই উপভোক্তার দ্বিতীয় আইডি দেখিয়ে নোডাল অফিসারকে হাতে করে পরিবারের অন্য সদস্যের নামে টাকা ঢোকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে পঞ্চায়েত সদস্যা রবিনা খাতুন ও তার স্বামী গোলাম মর্তুজা।যাদের দোতলা পাকা বাড়ি রয়েছে আবার তারাই পাচ্ছে সেই ঘর।অথচ যারা প্রকৃত ঘর পাওয়ার উপযুক্ত তারা বঞ্চিত রয়েছে।তাই ঘটনার তদন্ত চেয়ে বিডিও’র দ্বারস্থ হন তিনি।এমনকী মহকুমাশাসক ও জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানাবেন তিনি।যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী গোলাম মর্তুজা জানান, তাকে ফাঁসানোর জন্য চক্রান্ত করছে তৃনমূল নেতা আনোয়ার কবির ও তার দলের লোকেরা।ভুলবশত হয়তো দ্বিতীয় আইডিতে রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে। এখনো পর্যন্ত কোনো উপভোক্তার দ্বিতীয় আইডিতে টাকা ঢোকেনি।বিডিওর তদন্তের ভিত্তিতে সেই সব উপভোক্তাদের দ্বিতীয় আইডি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।অভিযোগ পেয়ে ঘটনা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে আসে জয়েন্ট বিডিও ও অন্যান্য আধিকারিকবর্গ। কিন্তু আধিকারিকেরা ফিরে যেতেই বচসায় জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল নেতা আনোয়ার কবির ও সিপিআইএম এর এক কর্মী সাদির হোসেন।বচসা থেকে শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি। এর জেরে আহত দুজনকেই হরিশচন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আহত সিপিআইএম-এর কর্মী সাদির হোসেন জানান, সংবাদমাধ্যমের লোক তার বাড়ির ছবি তুলতে গেলে তিনি আপত্তি করেন। তৃনমূল নেতা আনোয়ার কবির ও তার দলের লোকেরা না জেনেই তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ।এই ঘটনায় একে অপরের বিরুদ্ধে মারধোর করার অভিযোগ এনেছে দুজনেই। ঘটনায় হরিশচন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে বিবদমান দুপক্ষই।অন্যদিকে এবিষয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক বিডিও অনির্বাণ বসু জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে তালিকার সঙ্গে অসঙ্গতি থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।