নিউজ ডেস্ক , ২৬ সেপ্টেম্বর : ২৬ সেপ্টেম্বর হাজার ১৮২০ সালে মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। বাবা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মা ছিলেন ভগবতীদেবী।
খুব ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন বিদ্যাসাগর। বাড়িতে প্রচন্ড আর্থিক অনটন, দরিদ্রতা থাকা সত্ত্বেও তিনি কষ্ট সহ্য করে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। পড়াশোনার জন্য রাতে বাড়িতে ছিল না পর্যাপ্ত আলো। তাই রাস্তার আলোতে তিনি পড়াশোনা করতেন। বীরসিংহ গ্রাম থেকে কলকাতার দূরত্ব ছিল মাত্র ৫২ কিলোমিটার। গ্রাম থেকে অনেক সময় হেঁটেই কলকাতা যেতেন পড়াশোনার জন্য। বাংলার নবজাগরণের অন্যতম এই পুরোধা আপামর জনসাধারণের কাছে ‘দয়ার সাগর’ নামে পরিচিত। ১৮৪১ সালে সংস্কৃত কলেজ থেকে অতি দক্ষতার সঙ্গে তিনি উত্তীর্ণ হন। আর এই অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য তিনি কলেজ জীবনেই বিদ্যাসাগর উপাধি লাভ করেছিলেন। তিনি জনপ্রিয় শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়, কথামালা, বোধোদয়, আখ্যানমঞ্জরীব্যাকরণ সহ জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত বহু বইয়ের জনক তিনি৷ বিদ্যাসাগর শুধু নিজের লেখাপড়াতেই থেমে থাকেন নি। বাংলায় শিক্ষা প্রসার লাভের জন্য তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। বিশেষ করে নারী শিক্ষার উন্নয়নে কলকাতায় হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যেটি বর্তমানে বেথুন স্কুল নামে পরিচিত। ১৮৭২ সালে কলকাতায় উচ্চশিক্ষার জন্য মেট্রোপলিটন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। নারী শিক্ষার উন্নয়নে সেসময় ৪০ টিরও বেশি বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন। তাঁর অক্লান্ত লড়াই সংগ্রামের পর ১৮৫৬ সালে বিধবা বিবাহ আইন পাস করতে বাধ্য হয়েছিল ইংরেজরা। শুধু তাই নয়, বহু বিবাহ এবং বাল্য বিবাহও বন্ধ করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন বিদ্যাসাগর। ফলে বাঙালি সমাজে বিদ্যাসাগর আজও এক প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। পশ্চিম মেদিনীপুরে তাঁর স্মৃতিতে স্থাপিত হয়েছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। কলকাতার বিদ্যাসাগর সেতু তাঁর নামেই উৎসর্গিত।