নিউজ ডেস্ক, ২৪ সেপ্টেম্বর : লকডাউনে গ্রামে ফিরে এসে কোনও কাজ না পেয়ে অভাবের তাড়নায় বিষ পান করে আত্মঘাতী হল এক পরিযায়ী শ্রমিক। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার ব্লকের গুলন্দর দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের সুবর্ণপুর গ্রামে।
মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের নাম জয়নাল আলি ( ৫০)। জয়নাল আলি হরিয়ানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। তার ছেলে হাসিরুদ্দিনও ভিনরাজ্যে কাজ করতেন। আচমকাই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়ে শুরু হয়ে যায় লকডাউন। আর এতে করে কর্মচ্যুত হন লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক৷ কাজ হারিয়ে যায় জয়নাল আলিরও। জমানো কিছু টাকা দিয়ে হরিয়ানাতে নিজের পেট কিছুদিন চালানোর পর স্পেশাল ট্রেনে করে ইটাহারে তাঁর নিজের বাড়ি সুবর্ণপুরে ফিরে আসে জয়নাল ও তাঁর ছেলে। কিন্তু এখানেও একই অবস্থা। কোনো কাজ নেই। এই অতিমারির সময় সংসার চালাতে নাভিশ্বাস অবস্থা জয়নাল আলির। পঞ্চায়েত থেকেও কোনো কাজকর্ম মেলেনি বলে অভিযোগ। ফলে স্ত্রী ছেলেমেয়ে নিয়ে অথৈ জলে পড়েন তিনি। এরই মাঝে বুধবার বিকেলে আচমকাই বাড়ি থেকে বের হয়ে যান তিনি। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের লোকজনের দাবি, মূলত অভাবের তাড়নায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় জয়নাল।

অন্যদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারী থানার মহাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কড়চা এলাকাতেও অভাবের তাড়নায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল আরও এক পরিযায়ী শ্রমিক। মৃত শ্রমিকের নাম আলিউস হাঁসদা (৫৫)। বাড়ি ওই এলাকাতেই। মৃত ব্যক্তি ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন। কিছুদিন আগে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। আবার তার ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই আর্থিক কারণে স্ত্রীর সাথে বচসায় তিনি আত্মঘাতী হন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে পরিবার সূত্রে। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে কিছু দূরে একটি গাছে তার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান গ্রামবাসিরা। পরে বংশীহারী থানার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। গোটা ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকাতে।
