নিউজ ডেস্ক , ০৪ ডিসেম্বর : “মোগলি” নামটি শুনলেই একেবারে মনে পড়ে যায় “দ্য জঙ্গল বুক” এর কথা। তবে সেটি তো কাল্পনিক। তবে বাস্তব জীবনেও এমন একজন মানুষ আছে যার জীবনধারণ মোগলির মতোই। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় থাকেন আমাদের সেই রূপকথার জগতের মোগলি। যদিও তাঁর পোশকি নাম তার এলি। কাল্পনিক মোগলি চরিত্র একজন কিশোরের, তবে বাস্তবের এই মোগলি বাল্য অবস্থা থেকে বেরিয়ে কৈশোর পেরিয়ে এখন যৌবনে পা রেখেছে। তাঁর বয়স ২১ বছর। তবে এলির মোগলি হয়ে ওঠার কাহিনীটা কিছুটা ভীন্ন।
ছোটবেলা থেকেই মাইক্রোসেফালি নামে বিরল রোগে আক্রান্ত সে। এই রোগই এলিকে বানিয়েছে মোগলি। জানা গিয়েছে যে, এলি তার বাবা-মায়ের ষষ্ঠ সন্তান। এলির আগে তার বাবা-মায়ের পাঁচটি সন্তানই জন্মানোর পরই মারা যায়। তাই এলিই তাদের কাছে সবেধন নীলমণি। কিন্তু সেই এলি ছোট থেকেই বিরল রোগে আক্রান্ত। কথা বলতে পারে না। তার মাথা বাকি শরীরের তুলনায় অনেকটাই ছোট। দাঁতও বেশ অদ্ভুত ছিল। অদ্ভুত আকার ইঙ্গিত করত সে। গ্রামের লোকেরা তাকে তাড়া করত, ঢিল মারত। সেই বিদ্রুপের হাত থেকে বাঁচতে অদ্ভুত মুখভঙ্গি করত এলি। আর বিদ্রুপের হাত থেকে বাঁচতে জঙ্গলে গিয়ে বেশির ভাগ সময় কাটায় ওই তরুণ। তথাকথিত সভ্য এবং আধুনিক সমাজের আদব-কায়দা এলি বোঝে না। বোঝে না সামাজিক কোনও নিয়মকানুন। সাধারণ মানুষের থেকে একদমই আলাদা সে। রাতদিন জঙ্গলের মধ্যেই কাটে তার ও তার মায়ের সময়। জংলি পশু-পাখিরাই তার বন্ধু। ‘আফ্রিম্যাক্স’ নামের এক টেলিভিশন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ “গো ফান্ড মি” নামের একটি পেজ খুলেছেন। সেখানে চ্যানেল কর্তৃপক্ষের তরফে আবেদন করে লেখা হয়েছে, “এই একলা মা ও তার সন্তানকে সাহায্য করুন। ওদের কোনও উপার্জন নেই। তাই খাদ্যের অভাবে ভুগছে পরিবারটি। ছেলেটিকে জঙ্গলে গিয়ে ঘাস খেতে হয়। আসুন এই ছেলেটি ও তার মায়ের জীবন বাঁচাই।” সেই আবেদনের পরেই বিপুল সাড়া মিলেছে। এরই মধ্যে উঠে গিয়েছে প্রায় ৪ হাজার ডলার। সকলকেই আবেদন করা হয়েছে সাহায্যের।