
আর সি টি ভি সংবাদ – বয়স ছিল ১৭, কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বয়স হয়ে গেল ৩৪। ময়নাতদন্ত একজন ম্যাজিস্ট্রের সামনে হওয়ার কথা থাকলেও কিন্তু তা হয়নি। জলপাইগুড়ি কোরক হোমের আবাসিক নাবালক লাবু ইসলামের মৃত্যুর ঘটনার রিপোর্টে এইরকম একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। আদালতে পেশ করা এই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আদৌ লাবু ইসলামের কিনা তানিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যে কারণে আদালতের পক্ষ থেকে ওই নাবালকের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্ত করার বিষয়ে লাবু ইসলামের মায়ের সম্মতি নেওয়া হয়েছে।
বয়স আইনের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পরেছিল কোচবিহারের টাপুরহাটের বাসিন্দা নাবালক অপরাধী লাবু ইসলাম। যে কারণে তাকে জলপাইগুড়ির রেসকোর্স পাড়ার সরকারি কোরক হোমে রাখা হয়েছিল। গত বছর ডিসেম্বর মাসে ১৫ তারিখ হঠাৎ করেই হোমের একটি ঘর থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন – রায়গঞ্জের নামি শপিংমল চার টাকার জন্য দন্ডি গুনলো চার হাজার টাকা !
আইনের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া নিয়ে চলতি বছর জানুয়ারি মাসে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে জামিনের আবেদন করেছিলেন লাবু ইসলামের আইনজীবী সুমন শাহানবিশ। কিন্তু সরকারি হোমে এই নাবালকের আত্মহত্যার খবর আদালত জানার পরেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতিরা। এরপরেই বেঞ্চের পক্ষ থেকে কোরকের সুপারিন্টেন্ডেন্ট, কোতয়ালী থানার আই ও, এমনকি কোচবিহার এনডিপিএস কোর্টের বিচারক, সরকারি আইনজীবী সকলের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। কোথাও কোনও খামতি আছে কিনা, থাকলে কাদের খামতির জন্য বিচারাধীন থাকা একটি নাবালক আত্মহত্যা করলো। সেই বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়।
বুধবার জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের সহকারি সরকারি আইনজীবী অদিতি শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন সকলেই আদালতে বিচারপতিদের কাছে রিপোর্ট জমা করেছেন। কিন্তু সেই রিপোর্টে অসঙ্গতি আছে। আজ ওই নাবালকের মায়ের সাথে আদালত পৃথকভাবে কথা বলেছে। এছাড়া পুনরায় যদি ময়না তদন্ত করতে হয় তার জন্য মায়ের কাছ থেকে একটি অনুমতি নিয়েছে আদালত। আগামী কাল আদালত তার চুড়ান্ত নির্দেশ দেবে।
আরও পড়ুন – ছাত্রীকে দিয়ে শৌচালয় পরিষ্কার করানোর অভিযোগ উঠল এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে
এদিকে লাবু ইসলামের পক্ষের আইনজীবী সুমন শাহানবিশ বলেন যে রিপোর্ট জমা করা হয়েছে সেই রিপোর্টে অনেক খামতি সামনে এসেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নাবালকের বয়স ৩৪ দেখান হচ্ছে। আসলে তাঁর বয়স ছিল ১৭। সেটা বিচারপতিদের নজরে আনা হয়েছে। যেহেতু ময়না তদন্তের রিপোর্টে বয়স ৩৪ দেখান হচ্ছে। তাহলে ধরে নেওয়া যেতে পারে এই রিপোর্ট আদৌ এই নাবালকের নয়। যেকারণে পুনরায় ময়না তদন্ত করা যায় কিনা তানিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই আদালত সেটাকে মাথায় রেখে পরবর্তী নির্দেশ কি দেবেন সেটাই এখন দেখার। তাছাড়া ওই রিপোর্টে আরো অনেক অসঙ্গতি আছে।
এবার লাবু ইসলামের মৃতদেহ পুনরায় ময়না তদন্ত করা হবে কিনা তা নিয়ে আগামী কাল চুরান্ত নির্দেশ দেবে আদালত। আজ কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানির পরে এমনটাই জানিয়েছেন আদালতের সহকারি সরকারি আইনজীবী থেকে শুরু করে লাবু ইসলামের পক্ষের আইনজীবী।
