শান্তনু : পুরুষ কিম্বা মহিলা, জিনস এর প্যান্ট পছন্দ সকলেরই। ট্রেন্ডি ফ্যাশানে জিনসের জুড়ি মেলা ভার। তাহলে জানতেই হবে জিনসের আবিষ্কারের কথা। আসলে জেমস মার্শাল নামে এক সাহেব ১৮৪৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার কলমা এলাকায় সোনা খুঁজে পেয়েছিলেন। এই খবর জানতে পেরে সোনার খোঁজে দেশবিদেশ থেকে ক্যালিফোর্নিয়ায় হাজির হয়েছিলেন বহু মানুষ। শ্রমিক হয়ে নেমে পড়েছিলেন সোনার খনিতে সোনা খুঁজতে। সারাদিন খনিতে কাজ করে মিলতো সামান্য সোনা। প্রতিদিন খনিতে নেমে কাজ করার কারনে শ্রমিকদের পোষাক যেতো ছিঁড়ে।
আর এই ছেঁড়া পোষাক সেলাই এর জন্য শ্রমিকেরা দ্বারস্থ হতেন দর্জি জ্যাকভ ডেভিসের। তিনি হিমশিম খেয়ে যেতেন জামা প্যান্টে তালি মারতে মারতে। সেসময় জ্যাকভ ভাবতে শুরু করেন শ্রমিকদের জন্য এমন একটা পোষাক বানাতে হবে,যা সহজে ছিঁড়বে না। শক্তপোক্ত হবে। একটা সময় জ্যাকভ ডেভিসের সাথে পরিচয় হয় লিভাই স্ট্রস নামে এক জার্মান ব্যাক্তির। তাঁর রঙ ও কাপড়ের পারিবারিক ব্যবসা ছিলো। এই লিভাই স্ট্রসের দোকানেই কাপড় কিনতে আসতেন জ্যাকভ দর্জি।
তিনি একদিন লিভাই স্ট্রসকে বললেন, খনি শ্রমিকদের জামাকাপড় তৈরির জন্য একটা টেকসই কাপড়ের ব্যাবস্থা করে দিতে পারেন কিনা। দুজনে মিলে দোকানের গোডাউনে কাপড় খুঁজতে শুরু করেছিলেন। স্ট্রসের গোডাউনে একধরনের নীল ও মোটা কাপড় ছিলো। মালবাহী জাহাজের জিনিসপত্র ঢাকতে ও তাবু তৈরীতে এই কাপড় ব্যবহার করা হতো। কাপড়ের উপাদান কে বলা হতো ডেনিম।
ফ্রান্সের তাঁতিদের তৈরি করা এই ডেনিমের সুতো দিয়ে ইতালির জেনোয়া শহরের তাঁতি একধরনের শক্তপোক্ত কাপড় বানিয়েছিলেন। তার নাম ছিল জিন ফুস্তিয়ান। পরে জিন ফুস্তিয়ানের নামটি থেকে ফুস্তিয়ান শব্দটি ছেঁটে ফেলে নাম দেওয়া হয় জিনস । দর্জি জ্যাকভ এই কাপড় দিয়েই খনি শ্রমিকদের জন্য প্যান্ট বানিয়েছিলেন। নীল রঙের মোটা এই কাপড় ছিঁড়তো না,আর ময়লাও হোতো না। বলা বাহুল্য এই জিনস প্যান্ট ভীষন জনপ্রিয় হয়েছিলো। এভাবেই প্রয়োজনের তাগিদে তৈরী হয়েছিলো জিনস।