মহামারীর প্রকোপ থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে রতুয়াতে এই পুজোর সূচনা করেন তৎকালীন জমিদার

নিজস্ব সংবাদদাতা , রতুয়া , ১৩ নভেম্বর :  ঘোর মহামারীর প্রকোপ বঙ্গদেশ জুড়ে। না খেতে পেয়ে দুর্ভিক্ষে মারা যাচ্ছে মানুষ। রাস্তাঘাটে পড়ে থাকছে মৃতদেহ। ঘিরে ধরছে কুকুর-শকুনের দল। বর্তমান প্রজন্ম হয়তো সেসব দৃশ্য কল্পনা করতে পারবে না। কিন্তু সোমালিয়ায় বুভুক্ষু মানুষের মৃতদেহ শকুনে ছিঁড়ে খাওয়ার দৃশ্য দেখে যখন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে সেই প্রজন্ম, তখন এই বাংলায় ঘটে যাওয়া একই ঘটনা তাদের মনে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, তা সহজে বোঝা যায়।

ইংরেজি ১৭৭০ সালের দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রক্ষা পায়নি মালদা জেলাও। এই জেলাতেও না খেতে পেয়ে প্রচুর মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। দুর্ভিক্ষের হাত থেকে বংশের সঙ্গে দুর্গত প্রজাদের রক্ষা করতে কালীপুজোর আয়োজন করেছিলেন রতুয়া রুকুন্দিপুরের জমিদার বেণীমাধব ঘোষ। সেই থেকেই শুরু। এখনও নিরবিচ্ছিন্নভাবে হয়ে আসছে পুজো। এবার এই পুজো ২৫১ বছরে পা দিচ্ছে। তবে করোনার প্রভাব পড়েছে এই পুজোতেও৷ করোনা নিধনে এবার এই পুজোয় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বিশেষ যজ্ঞ। বেনীমাধব ঘোষের চতুর্থ পুরুষের বংশধর বিরোজানাথ ঘোষ জানান, বাংলার ১১৭৬ সন অর্থাৎ ইংরেজি ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে সারা বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছিল মহামারী। সেই মহামারী থেকে বাদ যায়নি আমাদের ভারতবর্ষের মালদা জেলাও। আমার প্রপিতামহ বেনীমাধব ঘোষ নিজের বংশধর ও প্রজাকুলের রক্ষার্থের জন্য দক্ষিণা কালী পুজো আরম্ভ করেছিলেন। সেই সময় থেকেই এই পুজো হয়ে আসছে। তবে আমাদের ঘোষ বংশে এই পুজো সীমাবদ্ধ থাকেনি। রতুয়া এলাকার ভক্তরা এখানে আসেন পুজো দিতে। জাগ্রত পুজো বলে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এখানে এসে ভিড় জমান। তবে শুধুমাত্র হিন্দুরা নন, প্রথম থেকেই এই পুজোয় সমানভাবে অংশগ্রহণ করেন ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষেরা। কালীপুজোর রাতে প্রায় ৫০০ টি ছাগ ও একটি মেষ বলি হয়। মন্দির চত্বরে বসে মেলা। সেই রাতে চলে নরনারায়ন সেবা। তবে এ বছর করোনা মহামারীতে সমস্ত দেশ আক্রান্ত। সেদিকে লক্ষ্য রেখে মন্দির চত্বরে কোন মেলার আয়োজন করা হবে না এবং মন্দিরের ভেতরে কোন মানুষ যেন প্রবেশ না করে সে বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তবে এবছর এই পুজোতে করোনা মহামারীকে ঠেকাতে বিশেষ যজ্ঞের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই যজ্ঞে যারা যারা আহুতি দিতে ইচ্ছুক সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সেই যজ্ঞে আহুতি দিতে পারবেন।

Next Post

পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার দুদিন পরে ইন্টারভিউয়ের কললেটার পেলো রায়গঞ্জের এক যুবক

Fri Nov 13 , 2020
নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ১৩ নভেম্বর :    ডাকঘরের গাফিলতিতে ব্যাংকে নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা হয়ে যাবার দুদিন পর ইন্টারভিউ কল লেটার হাতে পেলেন রায়গঞ্জ মোহনবাটীর যুবক অর্ক রঞ্জন দাস। এই ঘটনায় স্বাভাবিক কারনেই ভেঙে পড়েছে এই যুবক।।অন্যদিকে রায়গঞ্জ মুখ্য ডাকঘরের পোষ্টমাষ্টার রতন কৃষ্ণ রায় গাফিলতির অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। […]

আপনার পছন্দের সংবাদ