নিজস্ব সংবাদদাতা , হেমতাবাদ : আর কয়েকদিন বাদেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো ৷ তারপরেই আপামর বাঙালি মাতবে মা দূর্গার আরাধনায়। তবে করোনা আবহের জেরে অন্যান্য বছরের তুলনায় এইবছর দুর্গাপুজোর চিত্রটি পুরোপুরি ভিন্ন। আর এই করোনা আবহের মাঝেই মা দুর্গার মূর্তি বানিয়ে সবাই কে তাক লাগিয়ে দিল হেমতাবাদের বাসিন্দা সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মনাঙ্ক।
খুব ছোট থেকেই পরিবারের সকলের সাথে বাড়ির মণ্ডপে দুর্গা পুজোর অঞ্জলী দিত মনাঙ্ক। দেবী দুর্গা, ঝাঁকড়া চুলের অসুর, কিম্বা মস্ত হা করে থাকা সিংহের দিকে তাকিয়ে থাকতো অপলক দৃষ্টিতে। মাঝে মাঝেই বাবার হাত ধরে পৌঁছে যেত কুমোরটুলি তেও ঠাকুর বানানো দেখবে বলে। পাল কাকুর সঙ্গে ভাব জমিয়ে দেখতো কীভাবে তাল তাল কাদামাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরি হয়। সেই থেকেই মনের কোণে বাসা বেঁধেছিলো নিজের হাতে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করার ইচ্ছে। বাবা-মার বকুনি স্বত্বেও এবারে সেই স্বপ্নপূরণ হলো হেমতাবাদ সারদা বিদ্যামন্দিরের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মনাঙ্কর। ছোট্ট দুটি হাত দিয়ে আপন মনের মাধুরি মিশিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। তাঁর পড়ার ঘরের এক পাশে আড়াই ফিট উচ্চতার দুর্গা প্রতিমায় তুলির টান দিতে দিতে মনাঙ্ক জানায়, সে যখন আরো ছোট ছিলো তখন থেকেই তার প্রতিমা বানানোর ইচ্ছের কথা। এর আগে একবার খেলার ছলেই কালী ঠাকুরের প্রতিমাও বানিয়েছিলো সে। গত বছর ও দুর্গা বানিয়েছিল। তবে সেক্ষেত্রে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন তাঁর অঙ্কন শিক্ষক এবং প্রতিমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে তাঁকে সাহায্য করেছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

এবছর করোনা আবহের বিদ্যালয় বন্ধ, বাড়িতে বসেই অনলাইনে পড়াশোনা এবং পরীক্ষা দিতে হচ্ছে তাঁকে, পড়ার মাঝেই সুযোগ পেলে প্রতিমা তৈরির কাজে নিজেকে নিয়োজিত করছে ছোট্ট মনাঙ্ক। এবছর রথযাত্রার পর থেকে কাঠামো তৈরীর মধ্যে দিয়ে মনাঙ্ক মা দুর্গার প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছিল।
মনাঙ্কর মা তনুশ্রী ভৌমিক জানান, বাড়িতে বসেই মনাঙ্ক প্রতিমা তৈরি করছে। প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষের পথে। তাদের বাড়িতেও দুর্গাপুজো হয়। গত বছরের মত এবছরও মনাঙ্কর তৈরি প্রতিমার পুজো করা হবে তাঁদের বাড়ির মা দুর্গার প্রতিমার সাথে। ভবিষ্যতে মনাঙ্ক আরো ভালো ভালো প্রতিমা তৈরী করতে চায় বলে ইচ্ছে প্রকাশ করেছে। ছোট্ট মনাঙ্কর এই প্রতিভায় খুশি এবং গর্বিত তাঁর পরিবারের সদস্যরা।