নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ১২ অক্টোবর : ‘গান ফিরেছে মাটির প্রাণে, মৃত্যু কেবল মিথ্যে হোক।’ – প্রয়াত সোমশুভ্র ওরফে চার্লির স্মরণে সোমবার অনুষ্ঠিত হল স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির। এদিন রায়গঞ্জের ইনস্টিটিউটে এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় রায়গঞ্জের সবুজ শিশুর উদ্দ্যোগে এবং স্টুডেন্ট ভলেন্টিয়ার্সের সহযোগিতায়। এদিনের শিবিরে বেশ কয়েকজন রক্তদাতা রক্তদান করেন।
উল্লেখ্য, গত বছর ১২ ই অক্টোবর না ফেরার দেশে পারি দিয়েছিলো সোমশুভ্র। সকলকে চোখের জলে বিদায় জানিয়ে চিরনিদ্রার দেশে পারি দিয়েছিলো সকলের প্রিয় চার্লি। বরাবরই প্রথম সারির ছাত্র ছিলো সোমশুভ্র। পড়াশোনা থেকে কুইজ, কুইজ থেকে খেলাধুলো সব কিছুতেই বরাবরই প্রতিভাবান ছিলো চার্লি। শুধুমাত্র জীবনের ক্ষুদ্র গন্ডিতে আবদ্ধ থাকেনি সোমশুভ্র, বিভিন্ন সময় দুঃস্থ পড়ুয়াদের জন্য শিক্ষা উপকরন নিয়ে পৌঁছে যেত প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে। আবার বিভিন্ন সময় দুঃস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়াত বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী, বস্ত্র নিয়ে। বন্ধুদের সাথে যুক্ত হয়ে তৈরী করেছিলো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সংগঠনের সদস্যদের পাশে নিয়ে সেবা করত আর্ত পীড়িত মানুষদের। তবে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পরে, মারণরোগ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় সে। দীর্ঘ লড়াই চালিয়ে গেলেও ক্যান্সার কেড়ে নেয় তার জীবন।
মাত্র ২১ বছর বয়সে ২০১৯ সালের ১২ ই অক্টোবর না ফেরার দেশে পারি দেয় সকলের প্রিয় চার্লি। প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে সবুজশিশু। সোমবার রায়গঞ্জের ইনস্টিটিউটে এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে তারা। এদিনের শিবিরে বেশ কিছু রক্তদাতা রক্তদান করেন। সবুজ শিশুর সদস্যরা জানিয়েছেন, ভীষণ প্রিয় বন্ধু ছিলো আমাদের। সংগঠনের প্রতিটি মানুষের অনুপ্রেরণা চার্লি। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ পেয়েছি। তবে গত বছর আজকের দিনে আমাদের সকলকে ছেড়ে চলে যায় সে। তার স্মৃতির উদ্দেশ্যেই মৃত্যুদিনে এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে আগামী দিনগুলোতে বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে। কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা চার্লির কণ্ঠে এখনও আমাদের কানে বাজে – ‘অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানে না সন্তরণ।’