নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ১৬ অক্টোবর : রায়গঞ্জের মোহনবাটী এলাকার রায় চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজো কয়েকশো বছরের পুরানো। বাংলাদেশের হরিপুর জেলায় এই বংশের পূর্বপুরুষেরা পুজোর প্রচলন করেছিলেন। নবাব আলিবর্দি খাঁ-র আমলে জমিদারী স্বত্ব পান এই বংশের পূর্বপুরুষ ঘনশ্যাম কুন্ডু। তার আমলেই বাংলাদেশে পুজোর সূচনা হয়। পরবর্তীতে দেশভাগের পর রায়গঞ্জে চলে আসেন পরিবারের সদস্যরা।
বর্তমানে জমিদারী প্রথার সেই জাঁকজমক না থাকলেও আগের নিয়মেই পুজো হয় রায় চৌধুরী বাড়িতে। পরিবারের সদস্য শিবশঙ্কর রায়চৌধুরী বলেন,” এখনো পূর্বের নিয়মেই পুজো করি আমরা। পুজো শুরু হয় প্রতিপদ থেকে। প্রতিপদ থেকে পঞ্চমী পর্যন্ত ঘটে পুজো হয়। ষষ্ঠীর দিন থেকে প্রতিমায় পুজো শুরু করেন পুরোহিত। ” রায়চৌধুরী বাড়ির পুজোতে বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। যেমন গনেশের বদলে কলাবৌ থাকে কার্তিকের পাশে। পুজোয় কোনো অন্নভোগ হয় না। বাকী রান্নায় লবন ও হলুদের কোনো ব্যাবহার করার নিয়ম নেই। বিসর্জন প্রথা থাকলেও কাঠামোর বিসর্জন হয় না। একই কাঠামোয় প্রতিবছর প্রতিমা তৈরী হয়। পুরোহিত ও ঢাকী বংশপরম্পরায় উপস্থিত থাকেন এই পুজোতে।
অন্যদিকে রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড়ের সেনবাড়ির দুর্গাপূজা প্রায় পাঁচশো বছরেরও বেশী পুরানো।
অবিভক্ত বাংলাদেশের যশোর ও রংপুরে জমিদারী ছিল সেন পরিবারের। যশোর জেলাতেই শাস্ত্র মতে এই বংশে পূজিতা হতেন দেবী দুর্গা। ১৯৪৬ সালে রায়গঞ্জে জমি কেনেন তারা। ১৯৫২ সালে পাকাপাকিভাবে রায়গঞ্জে চলে আসেন পরিবারের সদস্যরা। সঙ্গে নিয়ে আসেন পুজোর কিছু সামগ্রী ও বাংলাদেশের যশোর জেলার পুজো বেদীর মাটি। সেই মাটি রায়গঞ্জে নিয়ে এসে দেবীর বেদী তৈরী করা হয়। শাস্ত্রীয় নিয়ম মেনে পুজোর চারটি দিন অনারম্বর ভাবে পুজো হয় সেনবাড়িতে। পুজোতে রয়েছে বলিপ্রথা। তবে বলির সময় মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেন না মহিলারা।