নিউজ ডেস্ক , ২৬ ডিসেম্বর : খাবার খাওয়ার সময়, গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজের মধ্যে অথবা অবসর কাটানোর সময় হঠাৎ হেঁচকির প্রকোপ শুরু হওয়াটা খুব সাধারণ একটি বিষয়। খেতে বসে হেঁচকি উঠলে আমাদের মা-ঠাকুমাকে বলতে শোনা যেত, ‘কেউ নিশ্চয়ই মনে মনে তোর নাম করছে’। মা-ঠাকুমার কথা না-হয় বাদ রইল। চারপাশে হেঁচকি নিয়ে অন্ধবিশ্বাসের কমতি নেই। এমনও বলতে শোনা যায়, চুরি করে খেলে নাকি হেঁচকি ওঠে! অবশ্যই এর সঙ্গে বিজ্ঞানের কোনও যোগ নেই। তা হলে, হেঁচকি কেন ওঠে?
আমাদের বুকের খাঁচাকে পেট থেকে আলাদা করেছে একটি মাংসপিণ্ড। যার নাম ডায়াফ্রাম বা বক্ষচ্ছদা। শ্বাসপ্রশ্বাস প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এই ডায়াফ্রামের। এই ডায়াফ্রামের আকস্মিক সংকোচনের কারণেই হেঁচকি বা হিক্কা শুরু হয়। প্রতিবার সংকোচনের ফলে ভোকাল কর্ড সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায় বলে, হিক শব্দ তৈরি হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটি কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। ডায়াফ্রামের স্নায়ুতে ব্যাঘাত হলেই এই আকস্মিক সংকোচন দেখা দিতে পারে। স্ট্রোক, মস্তিষ্কে টিউমার ও আঘাত বা প্রদাহ হলেও হেঁচকি হয়। ডায়াবেটিস ও কিডনির অসুখ, রক্তে লবণের তারতম্য ঘটলে, অ্যানেসথেশিয়ার পর এবং নানা রকম ঘুমের ওষুধ বা স্টেরয়েড ওষুধ সেবনেও এটি হতে পারে। চটজলদি হেঁচকি থামানোর রয়েছে কিছু উপায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক,
১) লম্বা শ্বাস নিয়ে ভেতরে অনেকক্ষণ রাখুন। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই নাক বন্ধ রাখুন। সমস্যা মিটে যাবে।
২) ওজন কমাতে চিনি থেকে আপনি দূরে থাকলেও হেঁচকি উঠলে এক চামচ চিনি খেয়ে নিতে ইতস্তত করবেন না যেন! এক চামচ চিনি আপনাকে অনবরত হেঁচকির যন্ত্রণা থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি দিতে সক্ষম।
৩) অনবরত হেঁচকি উঠলে জিভ বের করে আঙুল দিয়ে টেনে ধরে রাখুন কিছুক্ষণ। হেঁচকি থেমে যাবে। শুনতে অদ্ভুত শোনালেও এটা কিন্তু বেশ কার্যকর।
৪) পিনাট বাটার তো এমনিতেই খেতে বেশ ভালো। তাই হেঁচকি উঠলে দেরি না করে ঝটপট খেয়ে নিতে হবে এক চামচ পিনাট বাটার। হেঁচকি থেমে যাবে।
৫) মুখের উপরের অংশটিতে ভাল করে মালিশ (ম্যাসাজ) করুন। প্রয়োজনে গলার পেছনের অংশে হালকা মালিশ করুন। এতেও হেঁচকি কমবে।
৬)হেঁচকি বন্ধ করতে লেবুর রসের সঙ্গে আদা কুচিও খেতে পারেন। এতে অল্প সময়ের মধ্যেই উপকার পাবেন।
তবে হেঁচকি ৪৮ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হলে, ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।