নিউজ ডেস্ক , ০৬ ডিসেম্বর : আবারও নক্ষত্র পতন বিনোদন জগতে। ফেলুদার পর প্রয়াত হলেন মছলিবাবা। রবিবার সকালে কসবার নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবীণ অভিনেতা মনু মুখোপাধ্যায়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।পরিবার সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানান সমস্যায় ভুগছিলেন অভিনেতা। শেষ কয়েক মাস একেবারেই শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন।
পাশাপাশি তাঁর হৃদযন্ত্রের সমস্যা দেখা গিয়েছিল বছর খানেক আগেই। ১৯৩০ সালের ১ মার্চ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন মনু মুখোপাধ্যায়। জন্মসূত্রে তাঁর নাম সৌরেন্দ্রনাথ,কিন্তু ডাক নামেই বিখ্যাত তিনি। ১৯৪৬ সালে ভারতী বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন, এরপর মহারাজা মণীন্দ্র চন্দ্র কলেজ থেকে আইএ পাস করেন। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল তাঁর। অল্প বয়সে পাড়ার নাটকের দলে মহিলা চরিত্রে অভিনয় করতেন। ১৯৫৭ সালে বিশ্বরূপায় যোগ দেন প্রম্পটার হিসেবে। ক্ষুধা নাটকে ঘটনাচক্রে কালী বন্দোপাধ্যায়ের পরিবর্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন মনু মুখোপাধ্যায়। এরপর ধীরে ধীরে উত্তরনের গল্প।
মনু মুখোপাধ্যায় প্রথম অভিনীত ছবি মৃণাল সেনের ‘নীল আকাশের নীচে’। এরপর বিশ্ববিখ্যাত পরিচালক সত্যজিত রায়, রোন্যান্ড জোফির সঙ্গে কাজ করেছেন প্রয়াত অভিনেতা। সত্যজিত রায়ের জয় বাবা ফেলুনাথে ভন্ড সাধু মছলিবাবার চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান তিনি। ছোট চরিত্রে অভিনয় করলেও দর্শক মনে নিজের ছাপ রাখতে বরাবর সফল হয়েছেন তিনি। ২০০৩ সালে পরিচালক অভিজিত্ চৌধুরীর পাতালঘর ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন মনু মুখোপাধ্যায়। পুরস্কৃতও হয়েছিলেন তাঁর সুদক্ষ অভিনয় ক্ষমতার জেরে। প্রথম জীবনে ছিলেন থিয়েটারের প্রম্পটার। তাঁর প্রথম ছবি মৃণাল সেনের নীল আকাশের নীচে। ছবিটি ১৯৫৯ সালে মুক্তি পায়। অভিনয় করেছেন মৃণাল সেনের মৃগয়া, সত্যজিৎ রায়ের জয়বাবা ফেলুনাথ, গণশত্রু ছাড়াও সাহেব, প্রতিদান সহ একাধিক বাংলা ছবিতে। ছোট পর্দাতেও নিয়মিত অভিনয় করেছেন মনু মুখোপাধ্যায়। বর্ষীয়ান অভিনেতার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলি পাড়া। প্রবীণ অভিনেতার মৃত্যুতে টুইট করে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।