নিজস্ব সংবাদদাতা , ডালখোলা , ১২ ডিসেম্বর : নুন আনতে পান্তা ফুরায়, তার উপর দুরারোগ্য ব্যাধি। চিকিৎসার খরচ বহন করতে নাজেহাল অবস্থা ডালখোলা পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বিনয় কলোনির দম্পতির। জানা যায়, দীর্ঘ তিন বছর ধরে অসুস্থ সমর বিশ্বাস। দীর্ঘদিন ধরে খাদ্যনালীর জটিল অসুখে আক্রান্ত তিনি। ডালখোলা থানায় ক্যান্টিন চালিয়ে কোনো মতে সংসার প্রতিপালন করছিলেন ওই দম্পতি।
সংসারের হাল ধরতে থানার ক্যান্টিনে স্বামীর সাথে কাজে হাত মেলানোর পাশাপাশি লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন সমর বাবুর স্ত্রী চঞ্চলা বিশ্বাস। চার মেয়ের মধ্যে কোনো মতে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন ওই দম্পতি। এরই মধ্যে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন সমরবাবু। তিন বছর যাবৎ কোনো রকমে লোকের সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করছিলেন তিনি। কিন্তু এরই মধ্যে অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শে তাকে যেতে হয় কলকাতায়। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানান জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করতে হবে সমরবাবুর। সেই কারণে প্রয়োজন মোটা অঙ্কের অর্থ। কিন্তু সেই অর্থ কোথা থেকে জোগাড় হবে সেই চিন্তায় বিভোর সমরবাবুর স্ত্রী চঞ্চলা বিশ্বাস। চিন্তায় খাওয়া বন্ধ করে নিরুপায় হয়ে চোখের জল ফেলা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই বলে জানিয়েছেন চঞ্চলাদেবী।
এই পরিস্থিতিতে তার এই দুর্দশার কথা জানতে পেরে শনিবার চিকিৎসার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন ডালখোলা তৃণমূল কংগ্রেসের মাইনরিটি সেলের সভাপতি ওয়াসিম আক্রম এবং যুব তৃণমূল কংগ্রেসের শহর সভাপতি রাকেশ সরকার। ওয়াসিমবাবু জানান, দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক কর্তব্য। তাই সমরবাবুর চিকিৎসার সাহায্যের জন্য সাধ্যমতো সাহায্য করেছি। অপরদিকে রাকেশবাবু বলেন, টাকার অভাবে একজন দুঃস্থ মানুষের চিকিৎসা হবে না তা কোনো মতেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই ডালখোলা শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেস এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের যৌথ উদ্দ্যোগে সমরবাবুর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হলো তার স্ত্রীর হাতে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির সম্পাদক দিপাঞ্জন মন্ডল জানান, আগামীতে ওই ব্যক্তির চিকিৎসার জন্য আমরা সর্বদা তার পাশে থাকব। অপরদিকে ওয়াসিম বাবু ও রাকেশ বাবুর আর্থিক সাহায্য পেয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন সমর বাবুর স্ত্রী চঞ্চলা দেবী। তিনি জানান বিগত তিন বছর ধরে চিকিৎসার খরচ বহন করতে করতে আমরা নিঃশেষ হয়ে গেছি। এই মুহূর্তে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। রাকেশবাবু এবং ওয়াসিমবাবু আমার স্বামীর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য করেছেন, তার জন্য আমি তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ।