নিউজ ডেস্ক , ১১ নভেম্বর : আর ক’দিন বাদেই আলোর উৎসব দীপাবলি। অশুভ শক্তির বিনাশ ও শুভ শক্তির আরাধনায় প্রস্তুতি তুঙ্গে সর্বত্র। দীপাবলির উদযাপনের সাথে সাথে বাংলার ঘরে ঘরে অলক্ষ্মী বিদায় ও মা লক্ষ্মীর আরাধনাও করা হয়। দেবী লক্ষ্মী এবং অলক্ষ্মীর সহাবস্থান একই সাথে ঘটে ৷ কারণ, যেখানে দেবী লক্ষ্মীর কৃপায় ধন, ধান্য, প্রাচুর্য্য ইত্যাদির আগমন ঘটে সেখানেই অদৃশ্য ভাবে অলক্ষ্মী বা অহংকার, ঈর্ষা ও মলিনতার আগমনের সম্ভাবনাও ঘটে ৷
তাই এই দিনে অলক্ষ্মী পুজোর মাধ্যমে মনের ঈর্ষা, মলিনতা, অহংকার ও তার ফলে আসন্ন দুর্ভাগ্য কে দূর করে ধন, ধান্য ও সৌভাগ্যের দেবী লক্ষ্মীর বন্দনা করে তাকে আমাদের গৃহে স্থাপন করা হয়। কিন্তু জানেন কি, কে এই অলক্ষ্মী দেবী? কেনই বা এর পুজো করা হয়? চলুন জেনে নেওয়া যাক –
পুরান অনুযায়ী অলক্ষ্মী হলেন দেবী লক্ষ্মীর জ্যেষ্ঠা ভগিনী। সমুদ্র মন্থনের সময় সমুদ্র নীচ থেকে অমৃতের কলস নিয়ে উঠে এসেছিলেন দেবী লক্ষ্মী এবং গরল অর্থাৎ বিষের পাত্র নিয়ে উঠে এসেছিলেন এই অলক্ষ্মী। আবার কোথাও কোথাও লেখা আছে, ব্রহ্মার মুখের জ্যোতি থেকে জন্ম হয়েছে দেবী লক্ষ্মীর এবং তাঁর মাথার পেছনের অন্ধকার থেকে জন্ম হয়েছে অলক্ষ্মীর। অলক্ষ্মী বলতে অত্যন্ত চঞ্চল বা কাজে কর্মে অকর্মন্য, অপরিছন্ন মেয়েদের বোঝানো হয়। পুরাণ মতে, অলক্ষ্মীকেও এইভাবেই বর্ণনা করা হয়েছে।
অত্যন্ত অপরিছন্ন, ছন্নছাড়া, গায়ের রং ময়লা, কুচকানো চামড়া অবিন্যস্ত চুল এবং পরনের কাপড়টিও অত্যন্ত ময়লা। অলক্ষ্মীর বাহন গাধা। শুধু রূপের দিক থেকেই নয় স্বভাবের দিক থেকেও ইনি দেবী লক্ষ্মীর সম্পূর্ণ উল্টো। যেখানেই হিংসা, ঝগড়া, অহংকার, একে অপরের প্রতি ঈর্ষা, অপরিচ্ছন্নতা এবং অন্ধকার সেখানেই এই দেবীর বসবাস। ইনি নিজের সঙ্গে দুর্ভাগ্য বহন করে নিয়ে আসেন। এই দিন ঘর বাড়ি পরিষ্কার করে চালের গুঁড়ো দিয়ে লক্ষ্মীর পা আঁকা হয় ৷ ঘরের চারপাশে আলো বা প্রদীপ জ্বালানো হয় ৷ এতে মনের অন্ধকার দূর হয় এবং ঘরে সুখ ও সমৃদ্ধির প্রতিষ্ঠা হয়। লক্ষ্মী ও অলক্ষ্মী আমাদেরই মনের দুই সত্ত্বা ৷ বাইরের পার্থিব সুখ ও সৌভাগ্যের আলোয় যাতে আমাদের মনের ভেতরে ঈর্ষা ও অন্ধকার যাতে আমাদের মনুষ্যত্ব কে গ্রাস না করতে পারে তার জন্যই এই পুজোর প্রচলন ৷