নিউজ ডেস্ক , শাশ্বতী চক্রবর্তী : আজ গণেশ চতুর্থী। অন্যান্য বছর মহাসমারোহে গজপতির পুজো উৎযাপন করা হলেও এবং করোনা আবহে আড়ম্বরহীন গণেশ চতুর্থী পালিত হচ্ছে দেশ জুড়ে।
মহাদেব ও পার্বতী পুত্র গণেশ তার বিভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের জন্য প্রসিদ্ধ। কিন্তু তার হাতির মাথাটিই তাকে সর্বাধিক পরিচিতি দান করেছে। গণেশকে বিঘ্ননাশকারী, শিল্প ও বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক এবং বুদ্ধি ও জ্ঞানের দেবতা রূপে পূজো করা হয়। বিভিন্ন শুভকাজ, উৎসব ও অনুষ্ঠানের শুরুতেও তার পূজোর প্রচলন আছে। অক্ষর ও জ্ঞানের দেবতা রূপে লেখার শুরুতেও গণেশকে আবাহন করা হয়।
প্রত্যেক দেব-দেবীর কোনো না কোনো বাহন রয়েছে। গণেশের বাহন ইঁদুর বা মুষিক। ইঁদুর মায়া ও অষ্টপাশ ছেদনের প্রতীক। বাহন কথার অর্থ, যে বহন করে। তাই প্রশ্ন জাগতেই পারে, ওইটুকু একটা প্রাণী এত বিশাল শরীরের একজনকে কী করে বহন করে! মূলত এখানেই ইঁদুরের চরিত্রবৈশিষ্ট্য মুখ্য। এই ছোট্ট প্রাণী একটু একটু করে আস্ত পর্বতও কাটতে সক্ষম। ইঁদুর মূলত ধৈর্য, অধ্যবসা ও উদ্যমের প্রতীক। তাই গণেশের বাহন ইঁদুর।
পুরাণ মতে, স্বর্গের ইন্দ্রপুরীতে ইন্দ্রের সভায় গান গেয়ে সকলের মনোরঞ্জন করতেন ক্রঞ্চ নামে এক গন্ধর্ব। একদিন বামদেব নামে এক ঋষি এসে উপস্থিত হন সেই সভায়। শুধু যে উপস্থিত হলেন তা-ই নয়, সেখানে তিনি তাঁর বেসুরো গলায় গান গাইতে শুরু করেন। ঋষি গান গাইতে শুরু করলে সুরের অভাব থাকায় বিদ্রূপ করে হেসে ফেলে গন্ধর্ব ক্রঞ্চ। স্বাভাবিকভাবেই ক্রুদ্ধ হন ঋষি। এরপর তিনি ক্রঞ্চকে অভিশাপ দেন যে, সে ইঁদুর হয়ে যাবে এবং আর কোনোদিন গান গাইতে পারবেন না। স্বাভাবিক ভাবে তখনই তিনি নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান বামদেবের কাছে কিন্তু তাতে বিশেষ কোনো লাভ হয় নি। অভিশাপের ফলে ক্রঞ্চ ইঁদুর হয়ে যান এবং এসে পড়েন মর্ত্যের খোলা মাঠে। তবে ঋষি বলেছিলেন, কোনোদিন যদি গণেশ তাঁকে বাহন করেন তবেই সে মুক্তি লাভ করবে।
ক্রঞ্চ মর্ত্য যে খোলা মাঠে এসে পড়ে সেই মাঠের কাছেই ছিল পরাশর মুনির কুটির। ইঁদুর ক্রঞ্চ সেখানেই নিজের খাদ্যের সন্ধানে হানা দিতে শুরু করেন। এ দিকে ইঁদুরের উৎপাতে অতিষ্ট হয়ে ওঠে সেখানকার বাসিন্দারা। এরপর একদিন গণেশ সেই মুনির কুটিরে পৌঁছোন। জানতে পারেন ইঁদুরের কুকীর্তির কথা। তখন তাকে ধরতে উদ্যত হন গণেশ। অবশেষে ধরেও ফেলেন। কিন্তু ক্রঞ্চ নিজের পরিচয় দিয়ে সব কথা খুলে বলেন গজাননকে। বলেন, বামদেব বলেছিলেন যে স্বয়ং গণপতি যদি তাকে তাঁর বাহন করেন, তবেই ঘুচবে তাঁর দুঃখ। এ কথা শুনে ইঁদুরকেই তিনি নিজের বাহন করে নেন।
মূলত এখানে ইঁদুরের চরিত্রবৈশিষ্ট্য মুখ্য। এই ছোট্ট প্রাণী একটু একটু করে পর্বত কাটার ক্ষমতা রাখে। এটি মূলত ধৈর্য, অধ্যাবসা ও উদ্যমের প্রতীক। তাই গণেশের বাহন ইঁদুর।
আরও পড়ুন ………………….শাড়ি তো কিনছেন, প্রতারিত হচ্ছেন না তো !