নিউজ ডেস্ক , ০৭ নভেম্বর : জামাকাপড়ে কড়া দাগ-নির্মূল করতে ভরসা ডিটারজেন্ট। আর এই করোনা পরিস্থিতিতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে ডিটারজেন্টের কোন বিকল্প নেই। সেই প্রাচীনকাল থেকে বাংলা ও বাঙালি পরিচিত ডিটারজেন্ট ‘নিরমা’ র সাথে। ৮০ র দশকের ছেলেমেয়েরা ছোটবেলায় শক্তিমান কিংবা অন্য কোন ধারাবাহিক চলাকালীন যে বিজ্ঞাপনটা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছে সেটি হল “সব কী পসন্দ নিরমা ওয়াশিন পাউডার নিরমা নিরমা।”
তবে জানেন কিভাবে পথ চলা শুরূ হয়েছিলো ‘নিরমা’র ?
শুরুটা বেশ কষ্টদায়ক ছিলো নিরমা ডিটারজেন্টের উদ্ভাবক কারসানভাই প্যাটেলের। রসায়ন বিভাগে স্নাতক পাশ করে ল্যাব টেকনিশিয়ান হিসেবে নিজের পেশাগত জীবন শুরূ তার। তারপর জীবনে এসেছে নানা উত্থান পতন। এরপর তিনি সিধান্ত নেন কাপড় পরিষ্কার করার ডিটারজেন্ট তৈরি করবেন। নিজেই ফেরি করে সেগুলি বিক্রি করতে বেড়িয়ে পড়তেন কারসানভাই। তখন বাজারে ছেয়ে গিয়েছে বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের ডিটারজেন্ট। সেসময় ঠিক পাল্লা দিতে পারছিলেন না বাজারের আর পাঁচটি বিদেশী কোম্পানিগুলোর সাথে। সে সময় তিনি ঠিক করেন তার তৈরী করা ডিটারজেন্ট সবচেয়ে কম দামে মানুষের কাছে পৌছে দিতে হবে। যখন বাজারে বিদেশী ডিটারজেন্টের প্রতি কেজির মূল্য ১৫ টাকা সেসময় তার তৈরী করা ডিটারজেন্ট বিক্রি করলেন ৩ টাকা প্রতি কেজি।
কিন্তু এর পরবর্তীতে কারসানভাই এর মেয়ে নিরমার মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। পুরোপুরি ভেঙে পড়েন তিনি। ঠিক করেন নতুন ভাবে ডিটারজেন্টের আত্মপ্রকাশ করবেন। সেই সময় থেকে ডিটারজেন্টের নামকরণ করা হয় তার প্রয়াত মেয়ের নামে। এমনকি প্যাকেটের ওপরের ফ্রক পরা মেয়েটির ছবিও অনুকরণ করা হয় নিরমার সাথে। এরপর বিজ্ঞাপনের হাত ধরে আত্মপ্রকাশ করে সেটি। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয় নি। নিরমার সেই বিজ্ঞাপনে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ডিটারজেন্টটি। বর্তমানে প্রায় ২৫০০ কোটির সম্পত্তি রয়েছে তার নামে। এমনকি শুধুমাত্র ভারতের ডিটারজেন্টের বাজারে তার শেয়ার ৩৬%। শুধু ডিটারজেন্টই নয় প্রয়াত নিরমার স্মৃতির উদ্যেশ্যে তিনি তৈরী করেছেন নিরমা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি সহ আরো অন্যান্য শিক্ষাক্ষেত্র। তার এই কৃতিত্বের জন্য ভারত সরকার তাকে ২০১০ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে।