নিউজ ডেস্ক, শাশ্বতী চক্রবর্তী : আজ কৌশিকী অমাবস্যা। মঙ্গলবার সকাল ৯ টা ৪৬ মিনিট হইতে বুধবার সকাল ৮ টা ২২ মিনিট পর্যন্ত থাকবে অমাবস্যা তিথি।
প্রতিবছর কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে বীরভূম জেলার তারাপীঠ মন্দিরে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। এই পুজো উপলক্ষে প্রতি বছর প্রায় কয়েকলক্ষ ভক্তের সমাগম হয় তারাপীঠ মন্দিরে। তবে এবছর তারাপীঠ মন্দিরের চিত্র একটু ভিন্ন। গোটা দেশ লড়ছে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে। সবক্ষেত্রে বিশেষ কিছু বিধিনিষেধ তৈরী করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
তবে এবছর করোনা আবহের জেরে জনসমাগম এড়াতে তারাপীঠ মন্দির কমিটি ও বীরভূম জেলা প্রশাসন ১২-ই অগাস্ট থেকে ২০ অগাস্ট পর্যন্ত মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পুরাণ মতে, অসুরদের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে স্বর্গের দেবতারা মহামায়ার তপস্যা শুরু করেন। দেবতাদের আরাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে মহামায়া দেবী মানস সরোবরের জলে স্নান করে কালো রং ত্যাগ করে কৃষ্ণবর্ণা দেবী কৌশিকীর রূপ ধারণ করেন এবং সেই রূপেই দেবী শুম্ভ নিশুম্ভ নামের দুই অসুরকে বধ করে দেবতাদের রক্ষা করেন এই তিথিতেই। সেই থেকেই পাপের বিনাশ করার জন্য তারাপীঠ সহ নানান পীঠস্থানে কৌশিকী রূপে দেবীকে পুজো করা হয়।
কৌশিকী অমাবস্যার প্রকৃত অর্থ হল তারা নিশি। এই তিথি তন্ত্র সাধনার এক বিশেষ রাত। অমাবস্যার এই বিশেষ তিথিতে সাধক বামাক্ষ্যাপা তারাপীঠের মহাশ্মশানের শিমূল গাছের তলায় মা তারার আরাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। মনে করা হয়, বিশেষ এই তিথিতে তারাপীঠে তারা মায়ের পুজো করলে সকল মনস্কামনা পূরণ হয়। এই কারনেই কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠ মন্দিরে হাজার হাজার পূণ্যার্থী আসে মায়ের আশীর্বাদ নিতে। এদিন তারাপীঠ মহাশ্মশানে নিশি পুজোর আয়োজন করা হয়।
তন্ত্র শাস্ত্র মতে, কৌশিকী অমাবস্যা তিথিতে মা তারার পুজো করে দ্বারকা নদীতে স্নান করলে শত জন্মের পুন্যলাভ হয়। তাই এই কারণেই তারাপীঠে এই তিথিতে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয় তারাপীঠ মন্দিরে।
তবে এবছর করোনা আবহে জনসমাগম এড়াতে তারাপীঠ মন্দির বন্ধ থাকলেও অমাবস্যার পুজো বন্ধ থাকবে না বলে জানা গিয়েছে তারাপীঠ মন্দির কমিটি সুত্রে। কেবলমাত্র সেবায়েতরা মন্দিরে প্রবেশ করে মা এর পূজার্চনা করবেন সমস্ত রীতিনীতি মেনে। শুধুমাত্র ব্রাত্য থাকবে ভক্ত সমাগম।