নিউজ ডেস্ক , ০৫ নভেম্বর : বিশ্বজুড়ে নামী দামী যে পোষাক রয়েছে, তার সঙ্গে এক সারিতে উচ্চারিত হয় এই শাড়ির নাম। রাজ রাজড়াদের পছন্দের এই শাড়ির পাটন পাটোলা নামে বিখ্যাত সারা বিশ্বে। গুজরাতের পাটন জেলায় পাওয়া এই শাড়ি নির্মাণের সুত্রপাত প্রায় ৯০০ বছরেরও বেশি। যদিও শুরুর সময়ে এটি শাড়ি হিসেবে নয়, তৈরি হত চাদর হিসেবে। ইতিহাস বলে, পাটনের রাজা কুমারপালার হাত ধরে আত্মপ্রকাশ এই শাড়ির।
তিনি বিশ্বাস করতেন পাটোলা বস্ত্র হল শুদ্ধতার প্রতীক। এই পোষাক পড়ে পুজো করলে সন্তুষ্ট হন ঈশ্বরও। প্রতিদিন এই কাপড়ের নতুন পট্টবস্ত্র পরে মন্দিরে পুজো দিতে যেতেন তিনি। যদিও সেসময় গুজরাতের পাটনে তৈরি হত না এই শাড়ি। মহারাষ্ট্রের জালনায় তৈরি হয়ে তা পৌঁছে যেত রাজার কাছে। তবে পরে রাজা কুমারপালা মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটকের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৭০০ পাটোলা শিল্পীকে নিয়ে আসে গুজরাতের পাটনে। এরপর সেখান থেকেই এই শাড়ির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। তবে এই শাড়ির বুনন পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ। সিল্কসুতোয় বোনা এই শাড়ি তৈরি হয় বিশেষ পদ্ধতিতে। একেকটি শাড়ি বুনতে লাগে কম করে প্রায় সাতমাস। গ্রাহকদের চাহিদামতো শাড়ি তৈরিতে লেগে যায় দু বছরেরও বেশি। সম্পূর্ণ সাবেকী পদ্ধতিতে এবং প্রাকৃতিক দ্রব্য দিয়ে নির্মিত হয় শাড়ি। ফুল, পাতা, গাছের মূল, ফলের রস থেকে প্রাকৃতিক রঙ নিয়ে বানানো হয় শাড়ি। যে কারণে এই শাড়ির দাম আকাশছোঁয়া। একেকটি শাড়ির দাম শুরু হয় দেড়লাখের ওপর থেকে। তবে আদতে এই শাড়ি ভারী হয়না মোটেই। ওজন হয় মাত্র ৫০০গ্রাম। যদিও পূর্বে অনেক শিল্পী এই কাপড় তৈরিতে জড়িত থাকলেও বর্তমানে একটিমাত্র পরিবার বংশ পরম্পরায় এই শাড়ি তৈরি করে আসছে। ফলে সরকারী ভাবে এই শাড়ি সংরক্ষণ করা না হলে একসময় চিরতরে হারিয়ে যাবে এই শাড়ি।