নিজস্ব সংবাদদাতা , ডালখোলা , ১৪ ডিসেম্বর : ডালখোলার নির্মাণাধীন বাইপাস এখন সমাজবিরোধী তথা নেশাগ্রস্থদের মুক্তাঞ্চল হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা নিয়ে চরম উদ্বেগে রয়েছেন এলাকাবাসীরা। সূর্যের আলো ফুরিয়ে অন্ধকার হতেই কার্যত ডালখোলার নির্মীয়মান বাইপাস চলে যায় সমাজবিরোধীদের দখলে। মদ, গাঁজা এমনকি ব্রাউন সুগারের মতো মারণ নেশায় মত্ত হতে দেখা যায় বহিরাগত একদল যুবককে।
ভোর হতেই পুরো বাইপাস রাস্তায় যত্রতত্র মদের বোতল পরে থাকতে দেখা যায় বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকি রাস্তার উপর বোতল ভেঙে ফেলে রাখছে নেশাগ্রস্থরা। এনিয়ে প্রতিবাদ করায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে বার কয়েক বচসার সৃষ্টি হয়েছে বহিরাগত সমাজবিরোধীদের সাথে। অভিযোগ সকালে প্রাতঃভ্রমন করতে এসে বহুবার ভাঙা মদের বোতলের টুকরো পায়ে লেগে জখমও হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এলাকাবাসীরা জানান রাতে দু একবার পুলিশের গাড়ি টহল দিতে এলে অন্ধকারে গা ঢাকা দেয় নেশাগ্রস্থরা। পরে পুলিশের গাড়ি চলে যেতেই আবার তারা ফিরে এসে দুষ্কর্ম শুরু করে দেয়। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বহিরাগতরা, যার কারণে বাইপাস সংলগ্ন বাড়ির শিশুদের মনেও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা জনৈক কিশোর মন্ডল বলেন, ডালখোলার বাইপাসে রাত হতেই বহিরাগত কিছু যুবক বাইক বা ছোট গাড়ি নিয়ে হাজির হচ্ছে। যেখানে তারা বিভিন্ন ধরনের দুষ্কর্মে লিপ্ত হচ্ছে। এছাড়া সন্ধ্যা হতেই প্রতিনিয়ত পুরো বাইপাস এলাকায় বসছে নেশার আসর, নেশাগ্রস্থ অবস্থায় তারা অনেকের সাথেই অভব্য আচরণ করছে। স্থানীয়রা এসবের প্রতিবাদ করতে গেলেই মাঝে মধ্যেই সমাজবিরোধীদের সাথে বচসার সৃষ্টি হচ্ছে। সকালে উঠে প্রায়শই দেখা যাচ্ছে রাস্তার উপর বিপদজনকভাবে ভাঙা মদের বোতলের টুকরো যেখানে সেখানে পরে থাকতে। এসবের কারণে এলাকার সুষ্ঠ পরিবেশ বিঘ্নত হতে বসেছে। প্রশাসনের উচিত বাইপাসে এসব দুষ্কর্ম বন্ধ করতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। নইলে আগামীতে এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হবে। বাইপাস সংলগ্ন এলাকার এক গৃহকর্ত্রী চিনি সরকার জানান, রাত হতেই ডালখোলা বাইপাসে বহিরাগত কিছু লোকজন এসে যেসব দুষ্কর্ম করছে তা ভদ্র সমাজে মোটেও কাম্য নয়। এইসব সমাজ বিরোধীদের দৌরাত্বে এলাকার পরিবেশ নষ্ঠ হচ্ছে। পুলিশ মাঝে মধ্যে পেট্রোলিং করতে এলে এইসব সমাজবিরোধীরা গা ঢাকা দেয়। পুলিশ যেতেই আবার এরা ফিরে আসে।
উল্লেখ্য ডালখোলার উপর দিয়ে যাওয়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজট থাকলে অনেক সময় ছোট গাড়ি থেকে শুরু করে যাত্রীবাহী গাড়ি বাইপাস হয়ে যাতায়াত করে। এমনকি রাতেও ছোট গাড়ি চলাচল করে যানজট এড়াতে। সে ক্ষেত্রে যে কোনো সময় এই সমাজ বিরোধীরা চড়াও হতে পারে গাড়ির যাত্রীদের উপর তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। পাশাপাশি বাইরের গাড়ি দেখে রাতের অন্ধকারে তাদের কাছ থেকে অনৈতিক টাকা তোলারও ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা। এব্যাপারে পুলিশকে আরো সচেতন হওয়ার দাবি জানিয়েছেন ডালখোলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সম্পদ কুমার আগরওয়াল।যদিও এই ঘটনার ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে না চাইলেও ডালখোলার থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন রাতে একাধিকবার বাইপাসে পুলিশের পেট্রোলিং গাড়ি যায়। এছাড়াও প্রতিনিয়ত বাইক নিয়েও বেশ কয়েকবার পেট্রোলিং করা হয় । সে সময় ওই এলাকায় কাউকে দেখা যায় না। তবে এই ঘটনা রুখতে উচ্চপদস্থ অফিসারদের সাথে কথা বলে বাইপাসে পুলিশ পেট্রোলিং বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।