নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ১৩ অক্টোবর : এশিয়ার বৃহত্তম পক্ষীনিবাস তথা উত্তর দিনাজপুর জেলা সদর রায়গঞ্জের গর্ব রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাস।
প্রতি বছর রেকর্ড সংখ্যক পরিযায়ি পাখি আসে রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাসে। এবছরও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। বরং এবছর অন্যান্যবারের তুলনায় আরোও বেশী পাখি এসেছে পক্ষীনিবাসে।
জেলা বনাধিকারিকদের দাবি, একটানা লকডাউন এবং টানা বর্ষার কারনে এবছর রেকর্ড পরিমান পরিযায়ী পাখির সমাগম হয়েছে কুলিক পক্ষীনিবাসে।
বিগত নয়ের দশক থেকে রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাসে পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করে। এই পক্ষীনিবাসে নাইট হেরন, ওপেন বিল ষ্টক, এগরেট, কর্মোরেন্ট প্রজাতির পাখি এসে প্রতি বছর বাসা বাঁধে এবং বংশ বিস্তার করে। ২০১৯ সালে ওপেন বিল ষ্টক ৬৫ হাজার ৮৬৪, নাইট হেরন ৮ হাজার ১২৪, ইগরিট ১১ হাজার ৯৭০ এবং কর্মোরেন্ট ৭ হাজার ১৩০টি এসেছিল। মে মাস থেকে জুন মাসের শেষ নাগাদ পরিযায়ি পাখিরা এই পক্ষিনিবাসে আসে এবং বংশবিস্তার করার পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি নাগাদ তারা তাদের পুরোনো গন্তব্যস্থলে ফিরে যায়। চলতি বছর করোনা সংক্রমনের জেরে দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষনা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এই লকডাউনের ফলে যান চলাচল এবং বিভিন্ন কলকারখানা পুরোপুরি বন্ধ ছিল, যার কারণে বায়ু দূষনের পরিমান অনেকটাই কমে যায়।
মে মাসের শেষ নাগাদ পাখি আসার সময় সীমা থাকলেও অনুকূল আবহওয়ার এবং সময়ের আগে বর্ষা আসায় মে মাসের মাঝামাঝি পাখি আসতে শুরু করে। লকডাউন এবং একটানা বর্ষার কারনে পাখির পরিমাণ চলতি মরসুমে অন্যান্যবারের তুলনায় ৬ হাজারের বেশী বেড়ে যায়। এবারে ওপেন বিল ষ্টক ৬৮ হাজার ১৫৯, নাইট হেরন ৭ হাজার ৯৫৬, ইগরিট ১৩ হাজার ৯৪ এবং কর্মরেন্ট ১০ হাজার ৪২২টি আসে। জেলা বনাধিকারিক সোমনাথ সরকার জানিয়েছেন, অনুকূল আবহাওয়া ছাড়াও বর্ষার কারনে পক্ষিনিবাস সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর পরিমানে মাছের খাদ্য, মাছ এবং শামুক পাওয়া গেছে। এসমস্ত কারনেই রেকর্ড সংখ্যক পরিযায়ী পাখি বাসা বেঁধেছে রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষীনিবাসে।
কুলিক পক্ষীনিবাসে রেকর্ড সংখ্যক পাখি এলেও তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ করেছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার পশু প্রেমী সংগঠনের কর্নধার গৌতম তান্তিয়া। পরিযায়ী পাখিদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো আটোসাটো করা হলে পাখির সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।