নিজস্ব সংবাদদাতা , হরিশচন্দ্রপুর , ১৮ অক্টোবর : জন্ম হয়েছিল আর পাঁচটা সুস্থ স্বাভাবিক শিশুর মতই। কিন্তু দিন যত এগিয়েছে তার শরীরের অনুপাতে বৃদ্ধি পেয়েছে তার মাথার আকৃতি।জটিল এই ব্যাধির চিকিৎসা করিয়ে কিভাবে মেয়েকে সুস্থ জীবন ফিরিয়ে আনা যায়, সে চিন্তাতেই আকুল হরিশচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কোয়ামারি গ্রামের বাসিন্দা ছোট্ট তানিশার বাবা-মা। তার বয়স মাত্র ১৩ মাস।
জন্মের কিছুদিন পর থেকেই হাইড্রোসেফালাস রোগে আক্রান্ত হয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে সে। সুস্থ স্বাভাবিক জন্ম হলেও কিছু মাস পর থেকেই মাথার একাংশ ফুলে যেতে থাকে তার। মাথার ভারে আর পাঁচটা শিশুর মত নড়াচড়ার ক্ষমতা নেই তার। মাথার দুই পাশে রয়েছে একটি করে ঘা। যার যন্ত্রণায় সবসময় ছটফট করতে থাকে ছোট্ট এই শিশুটি। স্থানীয় হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই রোগের এখানে কোনো চিকিৎসা নেই। চিকিৎসার জন্য কোলকাতা কিংবা বাইরে নিয়ে যেতে হবে।
কিন্তু তানিশার বাবা উজির হোসেন পেশায় একজন দিনমজুর। এলাকার ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ, কখনো আবার ভিন রাজ্যে যেতে হয় কাজের খোঁজে। হরিশ্চন্দ্রপুরের কোয়ামারিতে রাস্তার ধারে এক চিলতে টালির ঘরে বয়স্ক বাবা-মা স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে বাস করেন উজির হোসেন। মেয়েকে বাইরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই। কারণ যা উপার্জন হয় তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।
অন্যদিকে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড থাকলেও কোথায় গেলে বিনামূল্যে চিকিৎসা হবে তাও জানা নেই তাদের। ফলে এই রোগ-যন্ত্রণা নিয়ে সে এগিয়ে যাচ্ছে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে। এবিষয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমলকৃষ্ণ মণ্ডল জানান, মাথায় সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড জমে থাকার জন্য মাথা ওইভাবে ফুলে থাকে। এই রোগের তেমন কোনো চিকিৎসা এখানে তো নেই। চিকিৎসার পরও কতদূর সুস্থ হবে তার নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়।অন্যদিকে শিশুটির চিকিৎসার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে জেলাশাসকের সাথে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন মালদা জেলা পরিষদের কর্মাধক্ষ্যা মর্জিনা খাতুন।