রায়গঞ্জ, ৫ সেপ্টেম্বর : করোনা অতিমারির জেরে দীর্ঘদিন থেকেই স্কুলের পঠন পাঠন বন্ধ। এমতাবস্থায় পড়াশোনার চর্চাকে অব্যাহত রাখতে বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষাদান চলছে সর্বত্র। অর্থাৎ অনলাইন ক্লাস এর উপরেই নির্ভর করে রয়েছে সাধারণ পড়ুয়ারা। কিন্তু যাদের আর্থিক সঙ্গতি নেই। যাদের ক্ষমতা নেই সন্তান-সন্ততিদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেওয়ার।
তারা তো এই অনলাইন পড়াশোনা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত। তাই দুস্থ ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে এগিয়ে এল রায়গঞ্জের বেশকিছু প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকেরা। মুক্ত পরিবেশে শান্তিনিকেতনের ধাঁচে খুদেদের পঠনপাঠন করানো শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। নাম দেওয়া হয়েছে ” গাছতলায় পাঠশালা “। প্রান্তিক পরিবারের ছেলেমেয়েদের যাদের অনলাইনে পড়াশুনা করার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই তাদের নিয়েই এই গাছতলায় পাঠশালা বসেছে রায়গঞ্জের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জের মাঠে খোলা আকাশের নীচে গাছের ছায়ায়। শিক্ষক মশাইয়েরা নিজেদের অর্থেই কিনে আনছেন খাতা কলম ও টিফিন। ফলে খুশী দিন আনি দিন খাই পরিবারের খুদে পড়ুয়ারা।দীর্ঘ দেড় বছর ধরে অতিমারি করোনার কারনে বন্ধ রয়েছে সমস্ত স্কুল কলেজ সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্কুল বন্ধ থাকায় সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের। শহরের স্কুলগুলোতে অনলাইনে ক্লাস চালানো সম্ভব হলেও প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জের প্রান্তিক পরিবারের ছেলেমেয়েদের সেই সুযোগ থাকেনা। তাদের পরিবারের বাবা মা পেটের তাগিদে কাজে চলে যান। পড়ুয়াদের পড়াশুনা দেখানোর মতো সক্ষমতাও তাঁদের থাকেনা। ফলে পড়াশুনা থেকে একেবারে দূরে চলে যাচ্ছিল প্রত্যন্ত এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়ারা। মূলত তাদের উদ্দেশ্যেই রায়গঞ্জ শহরের বেশকিছু প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা এই ” গাছতলায় পাঠশালা ” কর্মসূচি বেছে নিয়েছেন। গাছের সাথে ব্ল্যাকবোর্ড টাঙিয়ে শ্রেনীকক্ষে খোলা আকাশের নীচে গাছের ছায়ায় বসে মুক্ত পরিবেশে পাঠদান করে যেমন আনন্দ পাচ্ছেন পাঠশালার গুরুমশাইয়েরা তেমনি প্রবল উৎসাহের সঙ্গে মন দিয়ে শিখছেন শিষ্যরাও।