নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ০৯ নভেম্বর : রায়গঞ্জ ব্লকের ভাতুন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ভাটোল হাট সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী কাঞ্চনেশ্বরী মন্দিরের কালীপুজো অন্যতম আকর্ষণ উত্তর দিনাজপুর জেলা বাসীর কাছে। প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো এই পূজার ইতিহাস কে ঘিরে নানা গল্প প্রচলিত রয়েছে। স্থানীয় আধিবাসীবৃন্দের কাছে তাদের বছরের সর্বাধিক আনন্দ উৎসবের উপলক্ষই হল কাঞ্চনেশ্বরী মন্দিরের এই কালীপুজো।
প্রতিবছর শুধু জেলাসদর রায়গঞ্জ নয়, পাশের জেলা দক্ষিন দিনাজপুর, মালদা, শিলিগুড়ি, কলকাতা এমনকি বাংলাদেশের মানুষও এখানে পুজো দেখতে আসেন এখানে। তবে এবছর করোনা আবহে সেই জাঁকজমক অনুষ্ঠানে কিছুটা ভাটা পড়বে বলেই মনে করছেন সাধারণ মানুষ। পুরনো ইতিহাস ঘাটলে জানা যায়, এই পূজার প্রচলন করেছিলেন আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে ভাটোল এলাকার এক মুসলমান জমিদার। তিনি তাঁর পরিবারের একটি ঝামেলার কারণে মামলা-মোকদ্দমায় জড়িয়ে পড়েছিলে। সেই সময় অবিভক্ত বাংলার জেলা সদর ছিল দিনাজপুর শহর। সেখানে তিনি নিয়মিত মোকদ্দমা লড়তে যেতেন। এমনই এক দিনে তিনি ভাটোল এলাকা থেকে গরুর গাড়ি চেপে দিনাজপুর শহরে যাওয়ার সময় কাঞ্চনেশ্বরী কালি মায়ের দৈববাণী শুনতে পান। সেই কালি মা নাকি তাকে বলেছিলেন, অবিলম্বে তার মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে হবে ভাটোল এলাকায়। তাহলেই তিনি এই মোকদ্দমা থাকে মুক্তি পাবেন। কিন্তু ইসলাম ধর্মের মানুষ হওয়ায় তিনি হবে প্রথমাবস্থায়ভ রাজি হচ্ছিলেন না। কিন্তু মায়ের নির্দেশে তিনি এক প্রকার বাধ্য হয়েই ভাটোল এলাকায় স্থানীয় হিন্দু বাসিন্দাদের সহযোগিতায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলে জানা যায়। স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ কুমার ব্যানার্জি বলেন, অত্যন্ত জাগ্রত এই কালী মায়ের মন্দির নিয়ে ভাটোল এলাকার বাসিন্দাদের আলাদা আবেগ রয়েছে। প্রতি বছর পুজোর দিন। ঢাক ঢোল সহযোগে উলু,শঙখ ধ্বনি , মশাল জ্বালিয়ে মা কে বরন করে আনেন ভক্তরা। তাই এই পুজো শুধু মায়ের আরাধনা নয়, হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির অন্যতম উদাহরণ হয়ে রয়েছে দীর্ঘদিনের অতীতকে সাক্ষী করে।