নিজস্ব সংবাদদাতা , ইটাহার , ২৩ নভেম্বর : হতদরিদ্র পরিবারের ছেলে সরকারিস্তরে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাওয়ায় খুশির আবহ ছড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার ব্লকের হাসুয়া গ্রামে। আনন্দ বর্মন প্রথমবার ডাক্তারী পরীক্ষায় বসে সর্বসাধারণের মধ্যে ৫৮০৭ এবং এসসি কোটায় ৪৮৯ র্যাঙ্ক করেছে। ইতিমধ্যেই মালদা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে সরকারিস্তরে ডাক্তারিতে ভর্তিও হয়েছে আনন্দ।
উল্লেখ্য হাসুয়া গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ বর্মন বরাবরই মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত। সে দুর্গাপুর অঞ্চলের রাজবাড়ী এলাকার ভূপাল চন্দ্র বিদ্যাপীঠের ছাত্র। তার বাবা প্রেম কুমার বর্মন দিনমজুরের কাজ করে এবং মা হিরন বর্মন গৃহবধূ। এছাড়াও তার বাড়িতে রয়েছে তার বোন পূজা বর্মন। দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে কোনরকমে দিন গুজরান করেন প্রেম কুমার বাবু। বরাবরই অভাবনীয় ফল করায় গ্রামের এক সহৃদয় ব্যক্তি আক্তার আলি আনন্দের পড়াশুনোর খরচের কিছুটা অংশগ্রহণ করতেন। এছাড়া স্কুলের শিক্ষকেরাও আনন্দকে নানানভাবে সাহায্য করতেন। সোমবার স্কুলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জানানো হলো কৃতি ছাত্র আনন্দ বর্মনকে।
উল্লেখ্য, আনন্দ প্রথমবার ডাক্তারি পরিক্ষায় বসে পশ্চিমবঙ্গে এসসি কোটায় ৪৮৯ র্যাঙ্ক এবং সর্বসাধারনের মধ্যে ৫৮০৭ র্যাঙ্ক করেছে। ইতিমধ্যে সে মালদা মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে সরকারিস্তরে ডাক্তারিতে ভর্তিও হয়েছে। হাসুয়া গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ বর্মন বরাবরই মেধাবী ছাত্র হিসেবে পরিচিত নিজের পরিবার সহ স্কুলে। সে দূর্গাপুর অঞ্চলের রাজবাড়ি এলাকার ভূপাল চন্দ্র বিদ্যাপীঠের ছাত্র। মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯২ শতাংশ নম্বর ও উচ্চমাধ্যমিকে ৯৪.২ শতাংশ নম্বর পেয়েছে সে। তার বাবা প্রেম কুমার বর্মন দিনমজুরের কাজ করে ও মা হিরন বর্মন গৃহবধু। বাড়িতে আছে এক বোন পূজা বর্মন। দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে কোন মত দিন আনা দিন খাওয়া হত দরিদ্র পরিবার প্রেম কুমার বর্মনের। দুই ছেলে মেয়ের পড়াশুনা তো দূরের কথা সংসার চালানো দায় প্রেম কুমার বাবুর কাছে। কিন্তু ছেলে পড়াশুনায় খুব ভালো। বাবা মায়ের পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফল করায় গ্রামের এক স্বহৃদয় ব্যক্তি আক্তার আলী আনন্দের পড়াশুনার খরচের কিছুটা অংশ ব্যায় করতেন। এছাড়া স্কুলের শিক্ষকরাও আনন্দকে নানানভাবে সাহায্য সহ বিনামূল্যে টিউশন পড়াতেন। পাশাপাশি স্কুলের পক্ষ থেকে কোচিং সহ স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে দেন। ফলে আনন্দের পড়াশুনার ক্ষেত্রে অনেকটাই সাহায্য হয়। টিনের বাড়িতে থেকে আনন্দের এই সাফল্য স্বাভাবিক ভাবে নজর কেড়েছে সকলের।
তার এই সাফল্যকে কুর্নিশ জানিয়ে হাসুয়া গ্রামে আনন্দ বর্মনের বাড়ি গিয়ে স্কুল সহ স্কুলের পরিচালন কমিটির পক্ষ থেকে মিস্টি মুখ, পুষ্প স্তবক সহ নানান উপহার দিয়ে সংবর্ধনা জানালো হলো সোমবার। এদিন দূর্গাপুর এলাকার ভূপাল চন্দ্র বিদ্যাপীঠ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল গোস্বামী সহ স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক এবং পরিচালন কমিটির সদস্য এবং এলাকার স্বহৃদয় ব্যক্তি আক্তার আলী আনন্দ বর্মনকে শুভেচ্ছা জানায়। আগামীতেও তার পাশে থাকার আশ্বাস দেন সকলে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল গোস্বামী জানান, আমাদের স্কুলের ছাত্র আনন্দ বর্মন ডাক্তারি পরীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গে খুব ভালো র্যাঙ্ক করেছে। সে মালদা মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে পড়াশুনার জন্য ভর্তিও হয়েছে। আমরা খুব গর্বিত তার এই সাফল্যে। আজকে তাই আমরা আনন্দকে তার বাড়িতে এসে সংবর্ধনা ও শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক সহ পরিচালন কমিটির পক্ষ থেকে। আগামীতেও আমরা ওর পাশে আছি সমস্তরকমভাবে। কৃতি ছাত্র আনন্দ বর্মন জানান, আমার এই সাফল্যে আমার বাবা মা তো আছেই।
পাশাপাশি আমার ভূপালপুর বিদ্যাপিঠ স্কুলের সকল শিক্ষক সহ আমার গ্রামের দাদু আমায় আর্থিক সহ নানান ভাবে সাহায্য করেছিলেন বলে আজকে আমি এই জায়গায় এসেছি। শুধু আমার বাবা মা এর পক্ষে আমার পড়াশুনার খরচ চালানো সম্ভব ছিলো না। এই বছর আমি প্রথম বার পরীক্ষা দিয়েই ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছি। আনন্দের বাবা প্রেম কুমার বর্মন জানান, আমরা খুব খুশি যে আমাদের ছেলে ডাক্তারিতে সুযোগ পেয়েছে। আমি আগে ভ্যান চালাতাম, এখন দিনমজুরের কাজ করি। এই কাজ করে আমার পক্ষে ছেলেকে পড়াশুনা করিয়ে এই জায়গায় আনা সম্বব ছিলো না। স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে গ্রামের সকলের আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে আজকে সাফল্য পেয়েছে আনন্দ।