নিজস্ব প্রতিবেদন : দৈনন্দিন জীবনে আমরা সকলেই কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত। যার দরুন দুশ্চিন্তা প্রায় স্বাভাবিক। পার্সোনাল ও প্রফেশনাল লাইফের জাঁতাকলে পড়ে আমরা প্রায়শই মানসিক অবসাদের শিকার হই। তবে এই অবসাদ যে আমার শারীরিক ও মানসিক ভাবে কতটা ক্ষতি করে তা হয়তো আমরা জেনেও না জানার ভান করে এড়িয়ে যাই। মানসিক অবসাদের জেরে আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে নানান ধরনের অযাচিত রোগ। কখনও আবার এই অবসাদ চরম পর্যায়ে পৌঁছে আমাদের ঠেলে দেয় আত্মহত্যার পথে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মনোরোগের চিকিৎসা থাকলেও আমরা নিজেরা সহায়তা না করলে এই অবসাদ কাটিয়ে ওঠা খুবই দুর্বিষহ। ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা যেহেতু মানসিক ব্যাধি সেহেতু আমাদের উচিত সর্বপ্রথম সেটিকে নিজে থেকেই প্রতিকারের চেষ্টা করা, যেমন –
গান শোনা – আমাদের সকলেরই কিছু না কিছু প্রিয় গান থাকে৷ যা বার বার শুনলেও একঘেয়ে লাগে না৷ গবেষণায় বলা হয়েছে, পছন্দের গান নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ করলে একঘেয়েমি দূর হয়।
পছন্দের বই পড়া – বই মানুষের সেরা বন্ধু। বই পড়লে যেমন বিবিধ জ্ঞানের মালিক হওয়া যায়, পাশাপাশি ধৈর্য বাড়ে। মানসিক শক্তিও বৃদ্ধি পায়। তাই সারাদিনে হাজার কাজের মাঝেও কিছুটা সময় বের করে বই পড়া যেতে পারে।
শরীরচর্চা – গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মানসিক অবসাদে শরীরচর্চা মোক্ষম ওষুধ৷ সারাদিন কম করেও এক থেকে দুই ঘন্টা সময় ধরে শরীরচর্চা করলে মানসিক অবসাদ দুর হয় পাশাপাশি শরীর সুস্থ থাকে।
পছন্দের রান্না করুন – আমাদের সকলেরই কিছু না কিছু পছন্দের খাবার রয়েছে। সেগুলো বাইরে থেকে অর্ডার না করে বাড়িতেই নিজে বানানোর চেষ্টা করুন।
পরিবারের সাথে সময় কাটান – বর্তমানে আমরা টিভি ও ইন্টারনেটের বেড়াজালে আবব্ধ৷ সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরেও যে একটা জগৎ আছে সেটা আমরা ভুলতে বসেছি। তাই প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল, টিভি, ল্যাপটপে মুখ গুজে না রেখে পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটালে অনেকটা মানসিক আনন্দ পাওয়া যায়।
পুষ্টিকর খাদ্যাভাস – জাঙ্ক ফুড যেন আমাদের আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছে। প্রমাণিত যে, জাঙ্ক ফুড অবসাদ বাড়ায় তাই খাবারের তালিকায় আমিষ ও শস্যজাতীয় খাবার রাখুন, এতে করে শক্তি বৃদ্ধি হবে ও পাশাপাশি মানসিকতা পরিবর্তনেও সহায়তা করবে।
নিজেকে ব্যস্ত রাখুন – কথায় বলে “শান্ত মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা”.. আপনি যদি সারাদিন শুয়ে বসে সময় কাটান তবে বিভিন্ন কুচিন্তা আপনাকে আঁকড়ে ধরবে। তাই আপনার পছন্দের কার্যকলাপে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কখনও কখনও নিজের হাতে নাও থাকতে পারে। তখন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। মনে রাখা ভালো, মানসিক চাপ দীর্ঘস্থায়ী হলে শারীরিক নানা ক্ষতি হতে পারে।
তাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন আর মানসিক অবসাদকে চিরকালের জন্যে জানান বিদায়।
আরো পড়ুন :করোনা থেকে বাঁচতে ‘ইমিউনিটি ‘ বাড়ানো দরকার – কিন্তু কিভাবে?