নিউজ ডেস্ক, ০৭ জুলাই : প্রয়াত হলেন কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। বুধবার সকাল ৭.৩০টায় মৃত্যু হয় তাঁর। অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি ছিলেন মুম্বইয়ের হিন্দুজা হাসপাতালে। দিলীপকুমারের মৃত্যুতে বলিউডে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। উল্লেখ্য দিলীপ কুমারের আসল নাম মুহাম্মদ ইউসুফ খান। ১৯২২ সালের ১১ ডিসেম্বর
পাকিস্তানের পেশোয়ারের খাইবারে একটি মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। তার বাবা লালা গোলাম সারওয়ার ছিলেন ফলের ব্যবসায়ী ছিলেন। মায়ের নাম আয়েশা বেগম।
দিলীপ কুমারকে হিন্দি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনেতাদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি একজন ভারতীয় অভিনেতা হিসেবে সর্বোচ্চসংখ্যক পুরস্কার বিজয়ী হওয়ার জন্য গিনেস বিশ্ব রেকর্ড ঝুলিতে নিজের জায়গা দখল করে নেন। তিনি তার অভিনয় জীবন জুড়ে অনেক পুরস্কার পেয়েছেন ৮ বার ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পুরস্কার সহ ১৯ বার ফিল্মফেয়ার মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি ১৯৯৩ সাল থেকে ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত হন এবং ২৫ জানুয়ারি ২০১৫ তে ভারত সরকার তাকে পদ্মবিভূষণ দেওয়ার ঘোষণা করে। আর তা ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে তার জন্মদিন উপলক্ষে তাকে প্রদান করা হয়। দিলীপ কুমার নাসিকের কাছাকাছি মর্যাদাপূর্ণ দেওলিয়ার বার্নস স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন। ১৯৩০ সালে শেষ সময়ে, ১২ সদস্যর পরিবার নিয়ে মুম্বাইয়ে পাড়ি জমান। ১৯৪৪ সালের “জোয়ার ভাটা” চলচ্চিত্রটির জন্য দিলীপকে প্রধান চরিত্রে অন্তর্ভুক্ত করেন এবং এই চলচ্চিত্রটিতে অভিনয়ের মাধ্যমে বলিউড শিল্পে প্রবেশ করেন। ১৯৪৭ সালে “নুর জাহানের” বিপরীতে “জঙ্গু” বক্স অফিসে তার প্রথম ব্যবসা সফল চলচ্চিত্রসহ ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেন। তাঁর অভিনীত ছবিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য জোগান (১৯৫০), দীদার (১৯৫১), দাগ (১৯৫২), দেবদাস (১৯৫৫), ইহুদী (১৯৫৮) ও মধুমতি (১৯৫৮)। তিনি মেহবুব খানের “অমর” (১৯৫৪) ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন। তিনি “দাগ” চলচ্চিত্রটির জন্য ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার জিতে নেওয়া প্রথম অভিনেতা ছিলেন এবং দেবদাস চলচ্চিত্রটির জন্য আবারও পুরস্কার প্রাপ্তির সামনে হাজির হন। তিনি নার্গিস, কামিনী কুশল, মিনা কুমারী, মধুবালা এবং বৈজয়ন্তীমালা-সহ সময়ের শীর্ষ অনেক জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের সঙ্গে জুটি গড়ে তোলেন।চলচ্চিত্র জগতে অসাধারণ অভিনয় দক্ষতার দৌলতে ষাট-সত্তর দশকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গিয়েছিলেন এই অভিনেতা। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সকলেই। তাঁর মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হল চলচ্চিত্র জগতের।