নিউজ ডেস্ক , ০৮ নভেম্বর : তারাপীঠের মহাসাধক বামাক্ষ্যাপার বংশধরদের তত্ত্বাবধানে দীর্ঘদিন ধরে আরাধনা করা হয় রাইগঞ্জ আদি করুনাময়ী কালী মন্দিরে। দীপাবলির রাতে এই ঐতিহ্যবাহী বন্দর কালীমন্দিরে শুধু উত্তর দিনাজপুর জেলাই নয়, ভিনরাজ্য থেকেও হাজার হাজার পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটে। আসাম থেকে পঞ্জাব, বিহার থেকে উত্তরপ্রদেশ সমস্ত ভিনরাজ্য সহ বিদেশ থেকেও দীপাবলীর রাতে বন্দর আদি করুনাময়ী কালীবাড়িতে কালীমাতার পুজো দিতে আসেন ভক্তরা। হাজার হাজার ভক্তের সমাগমে পূন্যতীর্থ হয়ে ওঠে রায়গঞ্জ শহর।
কথিত আছে আজ থেকে পাঁচশো বছর আগে পাঞ্জাব প্রদেশের কোন এক সাধু পায়ে হেঁটে এসে উপস্থিত হন রায়গঞ্জের কুলিক নদীর বন্দর ঘাটে। ঘাটের কাছেই একটি গাছের তলায় পঞ্চমুন্ডির আসনে বসে সিদ্ধিলাভ করেন৷ সেই থেকে শুরু হয় এখানে কালীর আরাধনা। বেদীতেই পুজোর প্রচলন হয়েছিল। ১২১৬ বঙ্গাব্দে দিনাজপুরের রাজা স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই স্থানে নির্মান করেন কালী মন্দির। এরপর তারাপীঠের মহাসাধক বামাক্ষ্যাপার বংশধর জানকীনাথ চট্টোপাধ্যায় বারানসী থেকে কষ্ঠীপাথরের কালীর মূর্তি এনে বসান পঞ্চমুন্ডির আসনে। সেটাও আজ থেকে প্রায় ২১৪ বছর আগের কথা। সেই থেকেই ওই একই মূর্তিতে দক্ষিনা কালীমাতার পুজো হয়ে আসছে বন্দর আদি করুনাময়ী কালীবাড়িতে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় এই মন্দিরে কালীপুজোর রাতে মায়ের পায়ের নূপুরের ধ্বনি শোনা যায়। তন্ত্রমতে এখানে দেবী পূজিতা হন। মাছ ভোগ দেওয়ার পাশাপাশি ছাগ বলির প্রচলন রয়েছে বন্দর আদি করুনাময়ী কালীবাড়িতে। আজও বন্দর আদি করুনাময়ী কালীমন্দিরে বংশপরম্পরায় পুজো করে আসছেন সাধক বামাক্ষ্যাপার বংশধরেরা। তবে এবারে তাতে ছেদ পরছে। গত মাস দেড়েক আগে মন্দিরের বর্তমান সেবাইত মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় প্রয়াত হয়েছেন। পরিবারে অশৌচ থাকায় এবারে অন্য কোনো পুরোহিত পুজো করবেন৷ পরবর্তীতে মৃত্যুঞ্জয় বাবুর পুত্র পরম্পরা অনুসারে এই পুজোর দায়িত্ব গ্রহন করবেন।
এবারে শিল্পী ভাতা প্রকল্পে বড়সড় দালাল চক্রের হদিশ উত্তর দিনাজপুরে
পুজো আয়োজক কমিটির প্রতিনিধি রুপেশ সাহা জানান, প্রতিবছর এই মন্দিরের পুজো ঘিরে প্রায় ৫-৬ দিন থেকে উৎসবের আবহ তৈরী হয়। এককথায় মিলনক্ষেত্রে পরিনত হয় এই পুজোস্থল। পাড়ার সকলে মিলিত হয়ে পুজোর বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিবারের মত এবারেও প্রাচীন রীতিমেনেই পুজিতা হবেন দেবী।জাগ্রত এই দেবীর মাহাত্ম্য ছড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা ছাড়িয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এমনকি বিদেশেও। তাইতো দীপান্বিতার কালীপুজোর রাতে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয় রায়গঞ্জের এই বন্দর আদি করুনাময়ী কালীমন্দিরে। এমনিতেই সারাবছরই এখানে ভক্ত সমাগম হয়। ভক্তদের প্রনামী আর দান দিয়েই হয় দীপান্বিতার কালীপুজো।যাকে ঘিরে প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন সাধারণ মানুষ।