নিউজ ডেস্ক, ০৭ ডিসেম্বর : কথায় আছে, জন্মের পর প্রথম মুখে মধু দিলে মিষ্টি কথা বলা শেখে শিশুরা। এটা সত্যি নয়, কথার কথা। কিন্তু মধুর যে প্রকৃতই বিশেষ গুণ আছে, সে কথা স্বীকার করতেই হয়। হয়তো মিষ্টি কথা বলানোর গুণ নয়। শরীরের ক্ষেত্রে বিশেষ গুণ। সেই গুণ কিন্তু আবার একটি-দুইটি নয়। অসংখ্য। তবে অবশ্যই সেটিকে হতে হবে আসল।
তবে অন্য সব কিছুর মতো বর্তমানে মধুতেও মেশানো হচ্ছে ভেজাল। বড় বড় ব্র্যান্ডও মধুতে মেশাচ্ছেন চিনির রসের ভেজাল। বিভিন্ন সংস্থার তরফে মধুর নমুনা সংগ্রহ করে দেখা গিয়েছে তাতে চিনির পরিমাণ অনেকটাই বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিজ্ঞাপন দিয়ে ফ্রুকটোজ সিরাপ বিক্রি করছে নামজাদা ওই সংস্থাগুলি। ভেজালের রমরমা যেভাবে বেড়েছে তা দেখে স্তম্ভিত অনেকেই। কিন্তু কীভাবে চিনবেন খাঁটি মধু? চেনা কি অতই সহজ? তবে উত্তর, হ্যাঁ সহজ। সামান্য কিছু পরীক্ষাতেই বোঝা যাবে আসল ও নকলের তফাৎ।
১) বেশ কিছুদিন ধরে ঘরে রেখে দিলে মধুতে চিনি জমতেই পারে। সেক্ষেত্রে বয়ামসহ মধু গরম জলে কিছুক্ষণ রাখুন, এই চিনি গলে মধু আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কিন্তু নকল মধুর ক্ষেত্রে এটি হবে না।
২) একটি মোমবাতি নিয়ে সেটির সলতেটি ভালভাবে মধুতে ডুবিয়ে নিন। এবার আগুন দিয়ে জ্বালাবার চেষ্টা করুন। যদি জ্বলে ওঠে, তাহলে বুঝবেন যে মধু খাঁটি। আর যদি না জ্বলে, বুঝবেন যে মধুতে জল মেশানো আছে।
৩) এক টুকরো ব্লটিং পেপার নিন, তাতে কয়েক ফোঁটা মধু দিন। যদি কাগজ তা সম্পূর্ণ শুষে নেয়, বুঝবেন মধুটি খাঁটি নয়।
৪) প্রথমে কিছুটা মধু সাধারণ জলে ভালো করে গুলে নিন।
এবার সেই মিশ্রনে এক চামচ ভিনিগার এড করে দিন। আসল মধু হলে এর কোনো প্রভাব দেখতে পাবেন না, কিন্তু নকল হলে দেখবেন সেই দ্রবণ থেকে ফেনা বেরিয়ে তার রং ঘোলাটে হয়ে আসবে।
৫) কিছুটা মধু নিয়ে হাতের বুড়ো আঙুলে রেখে লক্ষ করুন। যদি মধু ভেজাল হয় তবে তা আঙ্গুল বেয়ে নীচে নেমে চারিদিকে ছড়িয়ে যাবে। আসল মধুর ক্ষেত্রে সেটি হবে না। আসল মধু ঘন ও শক্তভাবে আপনার আঙ্গুল আঁকড়ে জমাট বেঁধে থাকবে।
যদি উল্টোদিক থেকে আঙ্গুল কাত করেন দেখবেন আসল মধু ফোঁটার আকারে ওতো সহজে ঝরে পড়বেনা।
৬) একটা সাদা কাপড় নিয়ে তাতে একফোঁটা মধু ফেলুন।
মধু নির্ভেজাল হলে কাপড় সেটা চট করে শোষণ করবেনা, বিপরীতক্রমে ভেজাল মধু সহজেই কাপড়ে মিশে যাবে।
এবার কাপড়টি ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন আসল মধু হলে কাপড়ে একফোঁটা কোনো দাগ থাকবেনা কিন্তু নকল হলে তাতে দাগ লেগে থাকবে।
৭) কিছুটা মধু পাত্রে নিয়ে তা মডারেট তাপমাত্রায় গরম করুন। উত্তাপ দিলে আসল মধু কনডেন্সড ক্যারামেল এর মত চটচটে হয়ে যাবে ও ফাটতে দেখা দেবে। অপরদিকে মধু নকল হলে তার মধ্যে বাষ্প ঢুকে তা থেকে বুদবুদ গাঁজিয়ে উঠবে।