নিউজ ডেস্ক , ১৩ ডিসেম্বর : সামনেই বিধানসভা নির্বাচন, নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ক্ষমতা পেতে মরিয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল গুলি। আর এই পরিস্হিতিতে কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি নেতা-নেত্রীদের মুখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দের মতো মনীষীদের বন্দনা-ই বেশি শোনা যায়। এবার সেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ভারতের জাতীয় সংগীতেরই পরিবর্তন চেয়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে দ্রুত সাড়া পেয়ে রীতিমতো উৎফুল্ল বিজেপির সাংসদ সদস্য তথা অন্যতম নেতা সুব্রামোনিয়ান স্বামী।
এমনিতে রবীন্দ্রনাথের লেখা নিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের বিভিন্ন মহলে আপত্তির কথা শোনা যাচ্ছে। মোদি ক্ষমতায় আসার পর সঙ্ঘের শিক্ষা সেলের নেতা দীননাথ বাত্রা এনসিইআরটির পাঠ্যক্রম থেকে রবীন্দ্রনাথের লেখা বাদ দেয়ার সুপারিশও করেছেন।মোদি অবশ্য পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে গত দুই বছরে রবীন্দ্রনাথের নানা কবিতা আবৃত্তি করেছেন। তার দলের অন্য নেতারাও ইদানীং বাংলায় এলে রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করতে ছাড়েন না। এ অবস্থায় সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর টুইট নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছে।ভারতের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে সুব্রহ্মণ্যমের আপত্তি কেন? প্রবীণ এই বিজেপি সাংসদের দাবি, শুধু তার নয়, দেশের যুব সমাজের বড় অংশের মনের কথা এটি। তার আপত্তির অন্যতম শব্দটি হলো জাতীয় সঙ্গীতে ‘সিন্ধু’ শব্দটির ব্যবহার। তার মতে, বর্তমান জাতীয় সঙ্গীতের কিছু কিছু শব্দ (সিন্ধু) অনাবশ্যক ধন্দ তৈরি করে। বিশেষ করে স্বাধীনতা-পরবর্তী পরিপ্রেক্ষিতে রবীন্দ্রনাথের ‘জন গণ মন’র শব্দ বদলে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির (আইএনএ) গাওয়া ‘জন গণ মন’র আদলে লেখা অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় সঙ্গীত ‘কাওয়ামি তারানা’র প্রথম পংক্তি ‘শুভ সুখ চ্যান’ গানটি ব্যবহারের পক্ষে তিনি।
এদিকে যে ‘সিন্ধু’ শব্দটি নিয়ে স্বামীর আপত্তি, আইএনএর গাওয়া গানেও তার উল্লেখ রয়েছে। তা ছাড়া ‘সিন্ধু’ শব্দটি বাদ দিলে আরএসএসের অখণ্ড ভারতের তত্ত্বই যে প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়, সে কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন অনেকে। তার আশা, আগামী বছর ২৩ জানুয়ারির মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করবে নরেন্দ্র মোদি সরকার। কিন্তু আগামী বছরই পশ্চিমবঙ্গে ভোট! তাই পশ্চিমবঙ্গে জিততে মরিয়া বিজেপি ভোটের আগে রবীন্দ্রনাথের লেখা দেশের জাতীয় সঙ্গীত বদলের ঝুঁকি নেবে কীনা সে প্রশ্ন থাকছেই।