নিউজ ডেস্ক, ৬ জানুয়ারী, জলপাইগুড়ি : মায়ের মৃতদেহ কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় হাসপাতালের কর্মীদের কোনও গাফিলতি ছিল কিনা, ঠিক কি ঘটনা ঘটেছিল সেদিন তা জানতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করলো জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের কাছ থেকেও এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে মায়ের মরদেহ কাঁধে তুলে নিয়ে যাওয়ার অমানবিক ঘটনার পর শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমের কাছে এমনটাই জানালেন জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের এম এস ভি পি কল্যান খাঁ।
হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স বা শববাহী গাড়ি না পেয়ে মায়ের মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে ক্রান্তির উদ্যেশ্যে পায়ে হেটে রওনা দিয়েছিলেন পেশায় রিক্সা চালক ছেলে। ছেলেকে মায়ের মরদেহ কাঁধে নিয়ে বহন করতে সহায়তা করেছিলেন অশীতিপর বৃদ্ধ বাবাও। অভিযোগ উঠেছিল, মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে গেলে ৩ হাজার টাকা দাবি করেছিল অ্যাম্বুলেন্স চালকেরা। যা তাদের পক্ষ দেওয়া সম্ভব ছিলোনা। শুধু তাই নয় সেইসময় তাঁদের সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়েও আসেনি। তাই মায়ের মৃতদেহ কাঁধে নিয়েই পায়ে হেঁটে ক্রান্তির উদ্যেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন ছেলে রামপ্রসাদ দেওয়ান৷ এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে। প্রশ্ন ওঠে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দিকেও। এই ঘটনার পরেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই হাসপাতালের কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের এম এস ভি পি কলাণ খাঁ। তবে প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের সমস্ত কর্মীদের সামনে দিয়ে মায়ের মরদেহ নিয়ে বেড়িয়েছেন রামপ্রসাদ বাবু। তখন কর্মীরা কি করছিলো! এই প্রশ্নের উত্তরে এদিন এম এস ভি পি বলেন সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হবে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠিও করা হয়েছে। কোনও অবস্থাতেই উপযুক্ত ব্যবস্থা ছাড়া মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে বের করতে দেওয়া হবে না। অমানবিক এই ঘটনার তদন্ত করা হবে কিনা সে প্রশ্নেরুত্তরে তিনি বলেন, এই ঘটনায় বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে, তার উত্তর পেতেই তদন্ত ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে সুপারেনটেন্ডেন্ট, প্রোফেসর এবং মেডিক্যাল অফিসারেরা আছেন। ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত করে তার রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালকদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত টাকা চাওয়ার বিষয়টি দেখার জন্য প্রশাসনের কাছে চিঠিও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজের এম এস ভি পি কল্যান খাঁ।