নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ০৭ নভেম্বর : দুর্গাপূজার রেশ কাটতে না কাটতেই সামনে আলোর উৎসব দীপাবলী ও কালীপুজো। কিন্তু করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের প্রভাবে মৃৎশিল্পীদের জীবনে জমাটবাঁধা অন্ধকার আরো জাঁকিয়ে বসেছে। রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ সহ বিভিন্ন পালপাড়ায় উৎপাদিত মাটির তৈরী সামগ্রীর চাহিদা তলানীতে এসে ঠেকেছে। দীপাবলীর আগে মৃৎশিল্পীরা ব্যাস্ত মাটির প্রদীপ তৈরীতে। মাটির প্রদীপের আলো তাদের গৃহকোন আলোকিত করে তুলবে এমন আশাতেই এখন বুক বাঁধছেন এই মৃৎশিল্পীরা।
আর কদিন বাদেই দীপাবলি উৎসব। অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলোর মধ্যেই আসন্ন দীপাবলি উৎসবে সামিল হবেন আপামোর মানুষ৷ অশুভ শক্তির বিনাশে ঘরে ঘরে জ্বলে উঠবে মঙ্গলদীপ৷ দুঃখ কষ্ট যন্ত্রণা মলিনতা আর হিংসার অবসানে পুতপবিত্র হয়ে উঠবে মানবমনও৷ কিন্তু এই করোনাকালে মন ভালো নেই রায়গঞ্জের মৃৎশিল্পীদের। প্রতিবছর এই মৃৎশিল্পীদের তৈরী মাটির সামগ্রী পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও পাড়ি দিত ওড়িষা,মধ্যপ্রদেশ,মহারাষ্ট্র সহ বিভিন্ন রাজ্যে। কিন্তু করোনা সংক্রমণ আর লকডাউনের কারনে এবছর বিক্রি একেবারে তলানীতে ঠেকেছে। উৎপাদিত সামগ্রী পড়ে রয়েছে কারখানাতেই। দীপাবলীর আগে তাই নানারকমের প্রদীপ তৈরীতে ই ব্যাস্ত এরা সকলেই। আর একারণেই রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ পালপাড়া, কুমোরটুলি সহ বিভিন্ন পালপাড়ায় এখন মৃৎশিল্পীদের ঘরে ঘরে এখন তুমুল ব্যস্ততা। আশা প্রদীপ বিক্রি করে কিছু বাড়তি পয়সা হাতে আসবে। প্রবীন মৃৎশিল্পী সুকুমার পাল বলেন,” পূর্বপুরুষের আমল থেকেই এই পেশায় যুক্ত আছি। কিন্তু করোনা ও লকডাউনের কারনে উৎপাদিত সামগ্রীর রপ্তানী বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খুব অভাবের মধ্যে রয়েছি আমরা। হাতে পয়সা নেই। সামনেই দীপাবলী। তাই অন্যকিছু না বানিয়ে প্রদীপ বানাচ্ছি। আশা করছি প্রদীপ বিক্রি করে কিছুটা লাভের মুখ দেখবো। ” পুরুষদের পাশাপাশি বাড়ির মহিলারাও সমান দক্ষ এই কাজে। শিল্পী বিউটি পাল বলেন,” সংসারের কাজ সামলে মাটির জিনিস বানাই আমরা। কিন্তু এবছর বিক্রি নেই বললেই চলে। দীপাবলীতে প্রদীপের চাহিদা রয়েছে। তাই এখন প্রদীপ বানাচ্ছি। দেখা যাক কী হয়!” সবমিলিয়ে যাদের হাতে তৈরী প্রদীপ সকলের গৃহকোন আলোকিত করে তুলবে তাদের জীবন পথ এখন ঘোর অনিশ্চয়তার মুখোমুখি। একটা আলোকিত ভোরের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন মৃৎশিল্পীরা।