নিজস্ব সংবাদদাতা , রায়গঞ্জ , ১৩ অক্টোবর : রায়গঞ্জ ব্লকের বাহিন জমিদারবাড়ির দুর্গাপূজা প্রাচীনত্বের আবহে আজো উজ্জ্বল। কালের আবহে জমিদার বাড়ির চোখধাঁধানো স্থাপত্য আজ অতীত,শুধু পুরোনো স্মৃতির বাহক হিসাবে পড়ে রয়েছে জরাজীর্ণ প্রাসাদটি। তবুও বাহিন জমিদারবাড়ির পুজো স্থানীয় বাসিন্দাদের কাজে একেবারেই নিজস্ব। যদিও করোনা আবহে এবারে পুজোর আকার ও আয়তন সবেতেই কাটছাঁট করেছেন গ্রামবাসীরা। হচ্ছে না ঐতিহ্যবাহী দশমীর মেলাও।
উল্লেখ্য এই জমিদারবাড়ির পূর্বপুরুষ ঈশ্বরচন্দ্র রায় চৌধুরী বিশাল জমিদারী ছিলো বাহিন ও তৎসংলগ্ন এলাকায়। নাগর নদীর গা ঘেঁষে ছিলো চোখ ধাঁধানো প্রাসাদ ও বৈভব। প্রাসাদ সংলগ্ন সিংহবাহিনীর মন্দিরে পূজিতা হতেন দেবী। যদিও মন্দিরের আসল মূর্তি পরে চুরি হয়ে যায়। সেসময় পূজো হতো রাজকীয় আড়ম্বরে। পুজোর সময় সাতদিন ধরে চলতো খাওয়া দাওয়া। জমিদারবাড়িতে বসতো যাত্রাপালা,গান বাজনার আসর। হাতি, বজরা ও পালকী চড়ে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এই পুজোয় আসতেন। পুজোর কয়েকটি দিন আনন্দ,উৎসবে মেতে উঠতেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু বর্তমানে এসব কিছুই বিস্মৃতির অন্তরালে। জমিদারবাড়ির বৈভব ও ঐতিহ্য আজ ধ্বংসস্তূপে পরিনত হয়েছে। ভেঙে পড়েছে প্রাসাদের একাধিক অংশ। কিন্তু আজো এখানে ইতিহাস যেন কথা বলে ফিসফিসিয়ে। জমিদারবাড়ির আধুনিক প্রজন্ম এখন আর ফিরেও তাকায় না সুপ্রাচীন এই পুজোর দিকে। বর্তমানে পুজোর যাবতীয় দ্বায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন গ্রামবাসীরা। তারা নিজেরাই চাঁদা তুলে বর্তমানে পুজোর আয়োজন করেন।
তবে কোভিড পরিস্থিতিতে এবছর জমিদারবাড়ির পুজোয় কোনও আড়ম্বর থাকছে না। সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে বন্ধ থাকছে দশমীর মেলাও। তবে পুরাতনী রীতি মেনে মাতৃ আরাধনায় কোনো খামতি রাখছেন না বাসিন্দারা। সব মিলিয়ে রাজরাজরার হারিয়ে যাওয়া ঐশ্বর্য আর বৈভবের ইতিহাসের সন্ধান যদি পেতে চান,তাহলে একবার ঘুরে আসতেই পারেন বাহিন জমিদারবাড়ির এই পুজোতে।