নিউজ ডেস্ক , ১০ই সেপ্টেম্বর : ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনে তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বাঙালি হিসেবে সশস্ত্র আন্দোলনের পথিকৃত ছিলেন তিনি। লড়াই করেছিলেন ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে। ৭ ই ডিসেম্বর ১৮৭৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। নিজে হাতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যুগান্তর দল। ছোট থেকেই তার অসম্ভব মেধা ও শক্তির কাছে থেকে হার মানত সকলে। নিজে একটি বাঘকে হত্যা করেছিলেন বলে তার নাম হয় বাঘাযতীন। তবে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর বুড়িবালামের যুদ্ধে আজকের দিনেই ইংরেজ পুলিশের গুলিতে প্রাণ যায় তার। তবে জানেন কী ঘটেছিল বুড়িবালামের যুদ্ধে ?
দিকে দিকে তখন বিপ্লবীদের রুখতে তল্লাশি শুরূ করেছে ইংরেজ পুলিশ। বিপ্লবের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। সশস্ত্র আন্দোলন রুখতে আগ্রাসী মনভাব নিয়েছে ব্রিটিশ পুলিশ। বাঘাযতীনরা লুকিয়ে তখন বালেশ্বরের গোপন ঘাঁটিতে। তারা বোঝেন আর বেশিদিন লুকিয়ে থাকা সম্ভব হবে না। এবারে মুখোমুখি হতেই হবে অত্যাচারী ব্রিটিশের। যতীন বলেন, “আর পালানো নয়। যুদ্ধ করে আমরা মরব। তাতেই দেশ জাগবে।” ৮ ই সেপ্টেম্বর পালিয়ে গেলেন বুড়িবালামের দিকে, এমনকি সেদিন সারাটা দিন কেটে গেল গভীর জঙ্গলে। ৯ ই সেপ্টেম্বর সকালে পৌঁছলেন বুড়িবালামের তীরে। আশ্রয় নিলেন তারা নির্জন পাহাড়ে।
কিন্তু ব্রিটিশ পুলিশ কিছু ভারতীয় চরের সহযোগিতায় পৌছে যায় বুড়িবালামের তীরে। চার্লস টেগার্ট সহ অন্যান্য ব্রিটিশ পুলিশকর্মীরা গুলি চালানো শুরূ করেন। পাল্টা জবাব দেয় বাঘাযতীন সহ অন্যান্যরা। মাত্র ৫ জন মিলে লড়াই চালিয়ে যান পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই শহীদ হন চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী। কিন্তু লড়াই ছাড়েনি বাঘাযতীন ও তার সঙ্গীরা। ইংরেজ পুলিশের তিনটে গুলি ছিন্ন ভিন্ন করে দেয় তার শরীর।
মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বাঘাযতীন। প্রায় ১০০ জন ইংরেজ পুলিশ নিহত হন ও বেশ অনেকজন পুলিশকর্মী আহত হন। অবশেষে পরদিন সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে শেষ হল যুদ্ধ। ১০ ই সেপ্টেম্বর বালেশ্বরের সরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন বাঘাযতীন। হাসপাতালে মৃত্যু শয্যায় তিনি বলেন “এত রক্ত ছিলো শরীরে ? ভাগ্যক্রমে, প্রতিটি বিন্দু অর্পণ করে গেলাম দেশমাতার চরণে।”