নিউজ ডেস্ক, রায়গঞ্জ, ২৭ সেপ্টেম্বর : প্রায় দুমাস পর হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে খুঁজে পেলেন মা। মায়ের চোখের আনন্দাশ্রু আর ছেলের মান অভিমানের আবেগের মিশেলে শনিবার রায়গঞ্জ পৌর বাসস্ট্যান্ডে জন্ম নিলো এক সুন্দর মুহুর্ত। বাসস্ট্যান্ডের কর্মচারী ও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে রবিবার পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেওয়া হলো বিহারের মধুবনী জেলার যুবক শ্যাম ঠাকুর। ছেলেকে ফিরে পেয়ে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন শ্যামের পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে তিন চারদিন ধরে পুর বাসস্ট্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছিলো শ্যাম ঠাকুর নামে এক যুবক। আংশিক মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলো সে। বাসস্ট্যান্ডের কর্মীরা বলেন,” শ্যাম একই জায়গায় দাঁড়িয়ে বা বসে থাকতো। কলের জল খেত শুধু। আমরা অনেকবার খাওয়ানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু খায় নি। শেষপর্যন্ত আমরা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্নধার কৌশিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি শ্যামকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। ” শ্যামের সাথে কথা বলে জানা গিয়েছে, তার বাড়ি বিহারের মধুবনী জেলার তিরুতা গ্রামে। প্রায় দুমাস ধরে বাড়িতে ফেরে নি। আগে দিল্লী ও হরিয়ানায় ছিলো। কিন্তু কী ভাবে এখানে এসেছে জানা নেই তার। রবিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বৃদ্ধা মা কপেলেশ্বরী ঠাকুর ভাই হেমন্ত কুমার ও ছেলে পবন ঠাকুর বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছাতেই শ্যাম পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। শেষ পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার কৌশিক ভট্টাচার্য ও ঝুমকি পাল শ্যামকে বুঝিয়ে গাড়িতে তুলে দেন। নিখোঁজ হওয়ার এতদিন পর মা ও প রিবারের সদস্যরা আসায় শ্যাম ক্ষোভে ফেটে পড়েন।বারবার গাড়ি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন।
শ্যামের মামা হেমন্ত কুমার জানান,তিন বন্ধু মিলে এক সঙ্গে ব্যবসা করলেও তার লাভ্যাংশের টাকা না দেওয়ায় শ্যাম বাড়ি থেকে নিখোঁজ হ য়ে যায়।অনেক খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছিল না।রায়গঞ্জ থেকে কৌশিকবাবু আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই আমরা আজ নিতে এসেছি। ভালো লাগছে। অন্যদিকে সমাজকর্মী কৌশিক ভট্টাচার্য জানান, দুদিন আগে বাসস্ট্যান্ড থেকে কয়েকজন কর্মী ফোন করে শ্যামের বিষয়টি জানান আমাকে। খুব কষ্ট করে ওর থেকে একটি ফোন নং নিয়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। আজ বিহার থেকে বৃদ্ধা মা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা এসেছেন। তাদের হাতে তুলে দিলাম শ্যামকে। ভালো লাগছে। কিছুদিন চিকিৎসা করলেই ফের সুস্থ জীবনে ফিরতে পারবে ও।