নিজস্ব সংবাদদাতা , হেমতাবাদ , ২৭ অক্টোবর : বিজয়া দশমীতে এক দিকে যখন বাংলা জুড়ে দশভূজার বিদায়ে বিষাদের ছায়া, তখন ঠিক উল্টো ছবি ধরা পড়ল উত্তর দিনাজপুর জেলার খাদিমপুর গ্রামে। দশমীর দিনই এই গ্রামে চন্ডী রূপী দেবী দুর্গার পুজো অনুষ্ঠিত হয়। হেমতাবাদের কমলাবাড়ি হাট ছাড়িয়ে দক্ষিণ দিকে প্রায় ১ কিলোমিটার গেলেই এই খাদিমপুর গ্রাম।
রায়গঞ্জ ব্লকের কমলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের খাদিমপুর গ্রামে প্রায় চার বিঘা জমির মধ্যে প্রাচীন একটি গাছের তলায় মন্দিরে দেবীর পুজো হয়। তবে এবছর নতুন মন্দির তৈরি হওয়ায় সেখানেই দেবীর আরাধনা চলছে। প্রতি বছরের মতো এবারও দশমীর দিন সোমবার রাতে দেবীর পুজো শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার দিনভর চলে পুজো। পুরানো রীতি মেনে আজও খাদিমপুরের বলাইচন্ডী রুপী দূর্গাপুজোয় চলে আসছে বলি প্রথা। পুজোর দিন দেবীকে সোনা ও রুপার গয়না দিয়ে সাজানো হয় রীতিনীতি মেনে। আর পাঁচজন বাঙালি যেমন বছরের প্রথম থেকেই দুর্গাপুজোর প্রতীক্ষায় থাকেন, ঠিক তেমনই খাদিমপুর গ্রামের বাসিন্দারা অপেক্ষায় থাকেন দুর্গাপুজো শেষ হওয়ার। পরিবারের মঙ্গল কামনায় পুজোর দিনে খাদিমপুর গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে চলে নিরামিষ ভোজন।পুজো কমিটির সদস্যরা জানান, দেবী দুর্গা এখানে মা চন্ডী রূপে পুজিতা হন। এখানে দেবী দুর্গার দশ হাতের পরিবর্তে থাকে চারটি হাত এবং এখানে মহিষ, অসুর কেউই থাকেনা। পুজো দেখতে দূরদূরান্তের বহু মানুষের সমাগম হয় এই গ্রামে। মা বলাইচন্ডী রূপী দুর্গার কাছে নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো দিলে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়, এমনটাই বিশ্বাস করেন এলাকার বাসিন্দারা। তবে এই পুজো কবে থেকে শুরু হয়েছিল তা সঠিক ভাবে না বলা গেলেও আনুমানিক ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে মা বলাইচন্ডী রূপে এখানে দেবী দুর্গা পূজা হয়ে আসছেন বলে জানা গিয়েছে। দশমীর দিন রাতে পুজোর পর এই মূর্তি বিসর্জন দেওয়া হয় না। মন্দিরে মূর্তি রেখে গোটা বছর মায়ের পুজো চলে। প্রতিবছর পুজো উপলক্ষ্যে মন্দির চত্বরে মেলা বসলেও এবছর করোনা আবহের জেরে প্রশাসন থেকে অনুমতি না মেলায় কেবল পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সংক্রমণ ঠেকাতে পুজো কমিটির উদ্যোগে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বিলি করা হয়েছে দর্শনার্থীদের মধ্যে।