নিউজ ডেস্ক, ১২ জানুয়ারী : “পারলে একটা বটগাছ হোস, পথিক এসে ছায়া পাবে, শান্তি পাবে, যাবার সময় হয়তো একটা ডালও ভেঙে নিয়ে যাবে। কিন্তু কত পাখি আশ্রয় নেবে, কত লতা পরজীবির মতো গজাবে তোকে ঘিরে। ধ্বংস হয়ে গেলেও শুধু ইতিহাসের বুকে লেখা থাকে, এখানে একটি বটবৃক্ষ ছিল “। ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব স্বামী বিবেকানন্দকে একথা বলেছিলেন।
ঠাকুরের এই বানীকে পাথেয় করে স্বামী বিবেকানন্দ সত্যিই হয়ে উঠেছিলেন যুব সমাজের কাছে এক বটবৃক্ষ। তাই তো সারা বিশ্বের যুবদের কাছে বটগাছের মতো অবস্থান করছেন ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের প্রিয় শিষ্য নরেন যিনি স্বামী বিবেকানন্দ। ” জীবে প্রেম করে যেইজন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর ” তাঁর এই বানীকে পাথেয় করে সারা বিশ্বের অগনিত মানুষ ও যুব সমাজ মানব সেবায় এগিয়ে এসেছেন।
ভারত যখন ইংরেজ রাজত্বে ছিল সেইসময় আমাদের ভারত মা একজন মানুষকে জন্ম দিয়েছিলেন যিনি শুধু আমাদের ভারতের নয়, প্রত্যেক মানবতার গৌরব। কলকাতার সিমলায় এক সম্ভ্রান্ত পরিবার দত্ত পরিবারের সন্তান নরেন বা বিলের জন্ম হয়েছিল ১৮৬৩ সালের ১২ জানুয়ারি। বাবা বিশ্বনাথ দত্ত এবং মা ভুবনেশ্বরী দেবীর এই সন্তান শৈশব থেকেই ছিলেন খুব চঞ্চল এবং মেধাবী প্রকৃতির বালক। ১৮৭৯ সালে ম্যাট্রিক পাশ করে প্রেসিডেন্সি কলেজ ও পরবর্তীতে স্কটিশ চার্চ কলেজে দর্শন নিয়ে পড়াশুনা করেন তিনি। গীতা, বেদ উপনিষদে আগ্রহী বিলে কেশব চন্দ্র সেনের নেতৃত্বে যোগ দেন ব্রাহ্মসমাজ আন্দোলনে। ‘ মানুষের মধ্যেই ঈশ্বর রয়েছে ‘ এই বিশ্বাস তিনি নিজের মনে গেঁথে নেন। সারাভারত ভ্রমন করে স্বদেশ প্রেমে মুগ্ধ হয়ে নিজের দেশ, নিজের জাতিকে সকলের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছেন। ভারতের বিভিন্ন জাতি, বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন ভাষা এবং বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মিশে তিনি নিজের এক নতুন রূপ গঠন করেন। এবং নিজেকে তৈরি করেন মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে।
১৮৯৭ সালে ১ লা মে কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন রামকৃষ্ণ মঠ। তারপর স্বামী বিবেকানন্দ বেলুড়ে তৈরি করেন বেলুড় মঠ। আমেরিকার শিকাগোতে বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে যোগদান করেন। যা বিশ্বের সর্বস্তরের মানুষের কাছে এক ইতিহাস। গোটা বিশ্বের যুব সমাজের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন অনুপ্রেরণা। ১৯৮৪ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় ১২ জানুয়ারি জাতীয় যুব দিবস হিসেবে প্রস্তাব দেওয়া হয়। ১৯৮৫ সালে যখন জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক যুব বছর হিসেবে উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন সেই বছর থেকে ভারতবর্ষে পালিত হচ্ছে ” জাতীয় যুব দিবস ” ১৯০২ সালে ৪ ঠা জুলাই স্বামী বিবেকানন্দ দেহত্যাগ করেন। ইতিহাসের পাতায় বাঙালীদের রত্ন তিনি। তাঁর বানী আজও মানুষের অন্তরে প্রেরনা যোগায়। যুব সমাজ স্বামীজির বানী স্মরন করে সংগ্রাম করে যাচ্ছে আজও